খালিয়াজুরী(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি:লকডাউন ঘোষিত নারায়ণগঞ্জ থেকে লুকিয়ে নারী ও শিশুসহ প্রায় দেড় শতাধিক লোক নিয়ে নৌপথে নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে আসার দায়ে ২ ট্রলার মালিককে জরিমানা ও তিনটি ট্রলার নিলামে দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) মো.এরশাদুল আহ্ম্মেদ এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
ভ্রাম্যমান আদালত অভিযুক্ত ট্রলার মালিক আজিজুল হককে (৩৫) ১০ হাজার টাকা ও বকুল মিয়া (৪৫) নামে অপর ট্রলার মালিকের কাছ থেকে নগদ ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। এসময় অপর ৩টি ট্রলারের মালিকেরা ট্রলার রেখে পালিয়ে যাওয়ায় ওই তিনটি ট্রলারকে জব্দ করে পৌনে দুই লাখ টাকায় নিলামে বিক্রি করেন ভ্রাম্যমান আদালত।
অভিযুক্ত ট্রলার মালিকেরা সবাই কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার কাকশ্রী এলাকার বাসিন্দা।
এদিকে, উপজেলা সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামে লকডাউন ঘোষিত নারায়ণগঞ্জ থেকে ২৬ জন লুকিয়ে এসে তারা হোম কোয়ারেন্টাইন না মানায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই গ্রামের প্রায় ২০০ পরিবারকে লকডাউন করেছে উপজেলা প্রশাসন।
ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমন রোধে লকডাউন ঘোষিত নারায়ণগঞ্জ থেকে লুকিয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে নারী ও শিশুসহ প্রায় দেড় শতাধিক লোক কিশোরগঞ্জের চামড়ার ঘাট থেকে পাঁচটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার যোগে তারা জনপ্রতি ৭-৮ শত টাকা ভাড়ায় নৌপথে রওয়ানা দিয়ে বুধবার সকালে নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার কিষ্টপুর ও শ্যামপুর এলাকায় পৌঁছেন তারা। পরে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) মো. এরশাদুল আহম্মেদ আইনশৃংখলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার কাকশ্রী এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে ট্রলার মালিক আজিজুল হক ও একই এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহমানের ছেলে ট্রলার মালিক বকুল মিয়াকে আটক করতে পারলেও অন্য তিন ট্রলারের মালিকরা দৌড়ে পালিয়ে গেলে তাদের ট্রলারগুলো জব্দ করা হয়। পরে ওইদিন রাত সাড়ে আটটার দিকে আটক দুুই ট্রলার মালিককে পনেরো হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং জব্দকৃত তিনটি ট্রলার নিলামে পৌনে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করেন ভ্রাম্যমান আদালত।
উপজেলার কিষ্টপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. শামীম মিয়া বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে নৌপথে ওইসব ট্রলারে আমার ইউনিয়নের কল্যাণপুর, কুতুবপুর, কিষ্টপুর ও নাজিরপুর গ্রামের প্রায় শতাধিক লোক বাড়ি এসেছে। তবে ওইসব লোকজনদেরকে অন্তত ১৪ দিন নিজ নিজ ঘরে থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ওই গ্রামগুলোর উপর উপজেলা প্রশাসনসহ আমরা জন প্রতিনিধিদের কঠোর নজরদারী থাকবে।
উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো. এরশাদুল আহ্ম্মেদ বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে নৌপথে লুকিয়ে লোক নিয়ে আসার দায়ে দুই ট্রলার মালিককে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং তিনটি ট্রলারের মালিকরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের ট্রলারগুলো জব্দ করে ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকায় নিলামে দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, উপজেলা সদর ইউনিয়নের ল²ীপুর গ্রামে ২৬ জন ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছে এবং তারা কোয়ারেন্টান মেনে না চলায় ডিসি স্যারের নির্দেশে ওই গ্রামটিকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়াও আরো যেসব গ্রামে নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এসে ঢুকেছে সবকটি গ্রামই প্রশাসনের কঠোর নজরধারীতে রয়েছে। তিনি বলেন, কোয়ারেন্টাইন না মানলে ওইসব গ্রামকেও লকডাইন করা হবে।
Leave a Reply