1. admin@protidinershomoy.com : admin :
  2. nasimriyad24@gmail.com : ডেস্ক রিপোর্ট : ডেস্ক রিপোর্ট
  3. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম

করোনায় ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা মেহেরপুরের ‘হৃদয়ে বিশ্বনাথপুর’ গ্রুপ

সংবাদ দাতার নাম
  • সময় : রবিবার, ১৭ মে, ২০২০
  • ৪৩৪ জন পড়েছেন

“হৃদয়ে বিশ্বনাথপুর” সংগঠন ভালবাসা জুগিয়েছে হাজারো মানুষের হৃদয়ে। মানুষ মানুষের জন্য এই লাইনটি মানুষ যতদিন স্মরণ করে চলবে ততদিন কোনো মানুষ অসহায় থাকবে না। এই মতাদর্শকে বাস্তবায়নের লক্ষে “হৃদয়ে বিশ্বনাথপুর” টিম অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

সংগঠন পরিচিতঃ
মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলায় মোনাখালী ইউনিয়নের ছোট একটি গ্রাম বিশ্বনাথপুর।

পুরো দেশ যখন করোনার ভয়াবহতায় নিস্তব্ধ তখনই বিশ্বনাথপুর গ্রামের ২০ জন যুবক ছেলে যারা সবাই ছাত্র। ২০ জনের ভিতর অধিকাংশই দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করে। কয়েকজন মাত্র গ্রামে থাকে।

নিজ গ্রামকে সুরক্ষিত রাখতে এবং গ্রামকে নিরাপদ রাখতে ২৮ মার্চ, ২০২০ এই দিনটিতে “হৃদয়ে বিশ্বনাথপুর” নামে একটি সংগঠন গঠন করে।
এটি একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক সংগঠন। গ্রামের বিত্তবানদের এবং গ্রাম থেকে প্রবাসে অবস্থানরত প্রবাসীদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়।

সংগঠনে কোনো সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক নেই।
২০ জন্য সদস্যের মধ্যে ৪জন সিনিয়র অাছেন। উনাদের নির্দেশনায় সকল কার্যক্রম পরিচালক হয়।
তবে এই সংগঠনের উদ্যোগতা অাল- মামুন(রিপন)।  তিনিই প্রথম ভেবেছিলেন যে গ্রামকে নিয়ে ভাল কিছু একটা করার দরকার। এই মহৎ উদ্যোগের মধ্য দিয়েই “হৃদয়ে বিশ্বনাথপুর” সংগঠনের পথচলা।

চলমান কার্যক্রমঃ
১। গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ ৫টি মোড়ে হাত ধোঁয়ার জন্য ৮০ লিটারের ড্রাম স্থাপন করা হয়েছে।
২। প্রতিদিন জীবাণু নাশক পুরো গ্রামে স্প্রে করা হয়।
৩। গ্রামের প্রতিটি পরিবারে এক বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং এক প্যাকেট করে জীবাণু নাশক বিলি করা হয়।
৪৷ গ্রামে কঠোরভাবে লকডাউনের পাশাপাশি সদস্যবৃন্দরা গ্রামে টহল দিয়ে থাকে, এতে করে কোনো মানুষ অযথতা বাইরে ঘুরাঘুরি করে না।
৫। গ্রামের সকল মানুষদের’কে মাস্ক ব্যবহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া। যারা মাস্ক ব্যবহার করেছে তাদেরকে শুভেচ্ছা স্বরূপ চকলেট দিয়ে ধন্যবাদ জানোর সাথে সাথে বাইরের থাকা অবস্থায় সবসময় যেনো মাস্ক ব্যবহার করে সেজন্য উৎসাহিত করা হয়েছে।
৬। গ্রামের সকল মানুষকে শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখে চলাচলের জন্য বলা হয়।
৭। পুরো গ্রামে করোনার প্রভাব, লক্ষণ, কিভাবে ছড়ায় এবং এই ভাররাস থেকে কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় এসব গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো মাইকিং এর মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা হয়।
৮। গ্রামের মুদি দোকান, সারের দোকান সহ অন্যান্য সকল দোকানের সামনে রং দিয়ে ৩ফুটের দুরত্ব নিশ্চিত করা হয় এবং দোকানের সামনে করোনায় সচেতনতার লিফলেট লাগিয়ে দেওয়া হয়।
৯। জনসমাগম এড়িয়ে চলতে গ্রামে সকল চায়ের দোকান এবং যেসকল স্থানে মানুষ বেশি ভিড় জমায় সেসকল স্থান গুলোতে সদস্যবৃন্দদের কঠোর টহলের মাধ্যমে জনসমাগম ভেঙে দেওয়া হয় এবং পরর্বতী সময়ে তারা যেনো একত্রিত না হয় সেজন্য উৎসাহিত করা হয়।
১০। সারাদিন ব্যাপী গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোতে লকডাউনের মাধ্যমে জরুরী কোনো প্রয়োজন ছাড়া গ্রামে প্রবেশ ও গ্রাম থেকে বের হতে দেওয়া হয় না।
খেটে খাওয়া দিন মজুরদের গ্রামে প্রবেশের সময় তাদেরকে জীবাণু নাশক স্প্রে ও স্যানিটাইজার দিয়ে জীবাণু মুক্ত করে তারপর গ্রামে প্রবেশ করানো হয়।
১১। বিক্রেতার মাঝে ১০ ফুট এবং ক্রেতাদের মাঝে ৩ফুট দুরত্ব রাখতে বক্স সেপ হাট ম্যানেজম্যাট করা করা হয়।
এতে করে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে ক্রেতাগন প্রয়োজনীয় খাবার সামগ্রী কিনতে পারে সেই সাথে যেসকল মানুষ মাস্ক বাদে হাটে এসেছে তাদেরকে হাটে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় নি।
১২। গ্রামে যেসকল দুঃস্থ মানুষ রয়েছে তাদেরকে সঠিক ভাবে বাচায়ের মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে রাত ১১টার পর বিভিন্ন খাবার সামগ্রীর একটি প্যাকেট যার ওজন ২০ কেজি প্রায়, খাবার সামগ্রী গুলো সদস্যবৃন্দগণ বাড়ি বাড়ি পৌঁছিয়ে দেই।
(দিনের বেলায় সবার সামনে খাবার দিলে তারা লজ্জা পাবে সেজন্য রাত ১১টার পর গ্রাম যখন নিস্তব্ধ তখন রাতের অাঁধারে তাদের বাড়িতে খাবার সামগ্রী পৌছিয়ে দেওয়া হয়)
১৩। রমজানের শুরুতে প্রতি সপ্তাহের জন্য দুঃস্থ পরিবারগুলোর মাঝে শুকনো ইফতার সামগ্রী দেওয়া হয়। (এই ইফতার সামগ্রী দেওয়া এখনো চলমান রয়েছে)
১৪। দেশ বিদেশে লকডাউনের ফলে সকল কিছুই বন্ধ। বিদেশের লকডাউনের ফলে প্রবাসীরা কাজ করতে পারছে না, প্রিয় পরিবার গুলোতে টাকা পাঠাতে পারছে না। তখন সংগঠনের সদস্যবৃন্দরা গ্রামের সকল প্রবাসীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের পরিবারের অবস্থা, তাদের সন্তান কতদিন অাগে টাকা পাঠিয়েছিল এসকল খোজ খবর নিয়েছে, যাদের বাড়ি গুলোতে একটু সমস্যা মনে হয়েছে তাদের বাড়িতে খাবার সামগ্রী পৌঁছিয়ে দেওয়া হয়।

পূর্ব পরিকল্পনা সমূহঃ
১। ঈদের কয়েকদিন অাগে দুঃস্থ পরিবার গুলোতে পুরুষ ও মহিলাদের প্রয়োজনীয় কাপড় এবং কিছু খাবার সামগ্রী দেওয়া হবে।
২। রমজান মাস, কুরঅান নাজিলের মাস। ২৭ রমজান রাতে কুরঅান নাজিল হয়েছিল। এই রাতে গ্রামের কিছু সংখ্যক মানুষের মাঝে পবিত্র গ্রন্থ কুরঅান শরীফ দেওয়া হবে।
৩। সংগঠনের নাম দিয়ে গ্রামে একটি লাইব্রেরি করা হবে যেটা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

পরিশেষ বলতে চাই “হৃদয়ে বিশ্বনাথপুর” সংগঠন সবসময় গ্রামের সকল মানুষের পাশে অাছে এবং ভবিষ্যতেও এভাবে পাশে থাকবে।
গ্রামের সকল প্রকার সেবামূলক এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গুলোতে “হৃদয়ে বিশ্বনাথপুর” নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাবে।

প্রদায়কঃ রাজু আহমেদ, শিক্ষার্থী, তিতুমীর কলেজ

সংবাদটি আপনার সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার দিন

এই ক্যাটাগরীর আরোও সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশেষ সংখ্যা

%d bloggers like this: