1. admin@protidinershomoy.com : admin :
  2. nasimriyad24@gmail.com : ডেস্ক রিপোর্ট : ডেস্ক রিপোর্ট
  3. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ঠাকুরগাঁওয়ে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন, থানায় অভিযোগ ঠাকুরগাঁওয়ে রোজাদার ও শিশুদের মাঝে ইফতার বিতরণ ঠাকুরগাঁও অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আরজেএফ’র ইফতার ও দোয়া  মাহফিল অনুষ্ঠিত রাজশাহী মহানগর আ’লীগের উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস পালিত পীরগঞ্জে ভোমরাদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত রাজশাহী মহানগর আ’লীগের ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন এতিম শিশুদের নিয়ে এডিবিবিএস এর  ইফতার ও দোয়া মাহফিল ঠাকুরগাঁওয়ে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর

কামাল লোহানীর মৃত্যুতে গভীর শোক উদীচীর

সংবাদ দাতার নাম
  • সময় : শনিবার, ২০ জুন, ২০২০
  • ৪৯৬ জন পড়েছেন

ভাষা সংগ্রামী, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম বাতিঘর, সাংবাদিক, উদীচীর সাবেক সভাপতি কামাল লোহানীর (৮৬) মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। কামাল লোহানী শনিবার সকাল ১০টা ১০ মিনিটে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
এক শোকবার্তায় উদীচীর সভাপতি অধ্যাপক ড. সফিউদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন বলেন, কামাল লোহানীর মৃত্যুতে দেশের প্রগতিশীল আন্দোলনে এক অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হলো। দেশ হারালো এক সূর্য সন্তানকে। দেশের প্রগতিশীল আন্দোলন তাঁর শারীরিক অনুপস্থিতি গভীরভাবে অনুধাবন করবে।
উদীচীর নেতৃবৃন্দ বলেন, শারীরিকভাবে অনুপস্থিত থাকলেও কামাল লোহানীর চেতনা-আদর্শ দেশের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে পাথেয় হয়ে থাকবে। উদীচী তাঁর আদর্শকে ধারণ করেই কামাল লোহানীর অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে বদ্ধপরিকর।
এদিকে কামাল লোহানীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের আয়োজন করে উদীচী। বিকাল ৪টার দিকে কামাল লোহানীর মরদেহ উদীচী চত্বরে আনা হলে প্রথমে শ্রদ্ধা জানান উদীচীর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এরপর শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে একে একে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদ, মহানগরের বিভিন্ন শাখা, কারক নাট্য সম্প্রদায়, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), সিপিবি নারী সেল, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, কৃষক সমিতি, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, নবনাট্য সংঘ, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, নাট্যজন শংকর সাওজাল, কবি মোহন রায়হান, ডাকসুর সাবেক জিএস ডা. মুশতাক হোসেনসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন। তাঁর পরিবারের সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, কামাল লোহানীর পুরো নাম আবু নঈম মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খান লোহানী। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার খান সনতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাবা আবু ইউসুফ মোহাম্মদ মুসা খান লোহানী। মা রোকেয়া খান লোহানী।
কামাল লোহানী প্রথমে কলকাতার শিশু বিদ্যাপীঠে পড়াশুনা শুরু করেন। দেশভাগের পর ১৯৪৮ সালে তিনি পাবনায় এসে ভর্তি হন জেলা স্কুলে। ১৯৫২ সালে মেট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এ সময়ই তিনি যুক্ত হন রাজনীতিতে। যোগ দেন পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টিতে। পাবনায় রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে যোগ দেন। পরে ভর্তি হন পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে। এই কলেজ থেকেই উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পরই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ইতি টানেন।
১৯৫৩ সালে পাবনার তৎকালীন জিন্নাহ্ পার্কে (বর্তমান স্টেডিয়াম) মুসলিম লীগ কাউন্সিলে নুরুল আমিনের আগমণের প্রতিবাদ করায় প্রথম গ্রেপ্তার হন তিনি। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের পক্ষে কাজ করায় আবারও গ্রেফতার হন। ১৯৫৫ সালের জুলাই মাসে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ঢাকা চলে আসেন। চাচাতো ভাই ফজলে লোহানীর সহযোগিতায় ওই বছরই দৈনিক মিল্লাত পত্রিকায় কর্মজীবন শুরু করেন। একই বছর তিনি ন্যাপে যোগ দিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৫৮ সালে সামরিক আইন জারি হওয়ার পর আত্মগোপনে চলে যান।
ঢাকা আসার পরই নাচের প্রতি আগ্রহের কারণে বুলবুল ললিতকলা একাডেমির হয়ে কামাল লোহানী তার নৃত্যগুরু জি এ মান্নানের ‘নক্সী কাঁথার মাঠ’ প্রযোজনায় অংশ নেন। পাকিস্তান সাংস্কৃতিক দলের হয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশে যান। ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী পালনে সরকারি নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে তাঁর ছিল দৃঢ় ভূমিকা। এসময় তিনি ‘দৈনিক আজাদ’, ‘দৈনিক সংবাদ’, ‘দৈনিক পূর্বদেশ’, ‘দৈনিক বার্তা’সহ বিভিন্ন পত্রিকার কর্মরত ছিলেন।সাংবাদিক ইউনিয়নে দু-দফায় যুগ্ম-সম্পাদক এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। গণশিল্পী সংস্থার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনও করেন। স্বল্পকাল কারাবাসের পর ১৯৬২ সালে ‘ছায়ানট’ এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সাড়ে চার বছর এই দায়িত্ব পালন করার পর ১৯৬৭ সালে মার্কসবাদী আদর্শে গড়ে তোলেন ‘ক্রান্তি’।
মুক্তিযোদ্ধা কামাল লোহানী ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম হাতিয়ার স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সংবাদ বিভাগের প্রধান। ১৯৭১ সালের ২৫ ডিসেম্বর তিনি দায়িত্ব নেন ঢাকা বেতারের৷ ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটে (পিআইবি) যোগ দেন। ১৯৯১ সালে তিনি প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৬ মাসের মাথায় বিএনপি সরকারের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ায় তিনি পিআইবিতে ফিরে আসেন। ২০০৮ সালে দুই বছরের জন্য আবার শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন৷
তিনি ২০১৫ সালে সাংবাদিকতায় একুশে পদক লাভ করেন৷ এছাড়াও তিনি কলকাতা পুরসভার দ্বিশতবর্ষ সম্মাননা, প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক সম্মাননা, রাজশাহী লেখক সংঘ সম্মাননা, ক্রান্তি স্মারক, ঋষিজ সম্মাননা ও স্মারক, জাহানারা ইমাম পদকসহ বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন৷
কামাল লোহানীর লেখা বইগুলো মধ্যে রয়েছে- ‘আমরা হারবো না’, ‘সত্যি কথা বলতে কী’, ‘যেন ভুলে না যাই’,, ‘মুক্তিসংগ্রামে স্বাধীন বাংলা বেতার’, ‘রাজনীতি মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীন বাংলা বেতার’, ‘মুক্তিযুদ্ধ আমার অহংকার’, ‘এ দেশ আমার গর্ব’, ‘আমাদের সংস্কৃতি ও সংগ্রাম’, ‘লড়াইয়ের গান’, ‘সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও নৃত্যশিল্পের বিস্তার’, ‘দ্রোহে প্রেমে কবিতার মত’ এবং কবিতার বই ‘শব্দের বিদ্রোহ’৷
কামাল লোহানী এদেশের সাংবাদিকতা, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শুধু একটি নাম নয়, একটি ইতিহাস। চির বিদ্রোহের অধ্যায়। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ; স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন- সর্বক্ষেত্রে সর্বাগ্রে থাকা মানুষ। ২০১২সালে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী’র সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি এবং চার বছর এ দায়িত্ব পালন করেন (২০১২ ডিসেম্বর – ২০১৬ ডিসেম্বর) এবং আমৃত্যু তিনি উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য ছিলেন। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)

সংবাদটি আপনার সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার দিন

এই ক্যাটাগরীর আরোও সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশেষ সংখ্যা

%d bloggers like this: