সুজন ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় এক কৃষকের প্রায় ২০ শতাংশ জমির লাউ গাছ শত্রুতা করে কেটে ফেলা হয়েছে। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক ও তার পরিবার।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) ভোররাতে উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্ত ওই কৃষকের নাম মফিজুল ইসলাম। তিনি বালিয়া ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া গ্রামের প্রয়াত আশির উদ্দীনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, মফিজুল ইসলাম পেশায় ভ্যানচালক৷ সে দিনরাত পরিশ্রম করে উপার্জন করে এবং উপার্জিত সে অর্থ দিয়ে সংসার চালাতে তাকে হিমশিম খেতে হয়। সংসার চালাতে ও দুই ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালাতে গিয়ে মফিজুল ইসলাম ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। সংসারের অভাব ঘোচানোর জন্যে স্ত্রী সালমা বেগম, দুই ছেলে সাদেকুল ইসলাম ও আবু সালেককে নিয়ে বাড়ির পাশে ২০ শতাংশ জমিতে লাউ চাষ করেন। ক্ষেতে ফলনও আসতে শুরু করেছে। তার মধ্যেই এই গাছ কেটে নেওয়ার ঘটনা ঘটল।
মফিজুলের স্ত্রী সালমা বেগম ঘটনার জন্য প্রতিবেশী খাদেমুল ইসলামের স্ত্রী হোসনে আরাকে দায়ী করেছেন। তিনি দাবি করেন, তাদের সঙ্গে ওই নারীর ঝগড়াঝাটি হয়েছিল। সেই বিরোধের জেরে ৭১টি লাউ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
সালমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বিরোধ থাকতেই পারে। কিন্তু তাই বলে আমাদের লাউ ক্ষেত এভাবে কেটে দেবে। এটা কোনো সচেতন মানুষের কাজ হতে পারে না। আমি তার বিচার চাই।
এদিকে মফিজুল ইসলামের ছেলে কলেজছাত্র সাদেকুল ইসলাম বলেন, প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে মা-বাবাকে নিয়ে এই লাউ ক্ষেত করেছি। রাতের আঁধারে লাউ গাছে গোড়া কেটে দিয়েছে তারা। এটা একেবারে অমানবিক কাজ। আমরা স্বপ্ন বুনেছিলাম অভাব ঘোচানোর, কিন্তু আমাদের সেই স্বপ্ন নষ্ট করে দিল তারা।
কৃষক মফিজুল ইসলাম ঘটনার জন্য প্রতিবেশীকে দায়ী করে বলেন, বিরোধ রয়েছে। তারা তো আমাদেরকে বলতে পারত, আমরা বসে সেটি সমাধান করতাম। কিন্তু তা না করে তারা আমাদের লাউ ক্ষেত কেটে দিয়েছে। আমি তাদের শাস্তি চাই।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত হোসনে আরার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের ভুল্লী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সরকার বলেন, লাউ ক্ষেত কেটে দেওয়ার বিষয়টি শুনেছি। তাদেরকে বলা হয়েছে, এজাহার দেওয়ার জন্য। এজাহার দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply