1. admin@protidinershomoy.com : admin :
  2. nasimriyad24@gmail.com : ডেস্ক রিপোর্ট : ডেস্ক রিপোর্ট
  3. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ০৮:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম
পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন হাবিব খান ইসমাইল বিএমডিএ’র আরও দুই কর্মকর্তা সাসপেন্ড, চেয়ারম্যানকে ভর্ৎসনা বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ফুটবল দলকে সম্মানী দিলেন আ: কাদের উৎসব রাজশাহী টেনিস প্রিমিয়ার লীগের খেলোয়াড় বাছাই সম্পন্ন চেয়ারম্যানের ইন্ধনে প্রকৌশলীকে ফেরাতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশের মানববন্ধন মহান স্বাধীনতা দিবসে পর্তুগাল বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ঠাকুরগাঁওয়ে ট্রাফিক বিভাগকে ট্রাফিক সাইনবোর্ড দিলো স্কাউটস ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল এর সহযোগিতায় ও এম এ এফ-এর আয়োজনে ইফতার মাহফিল  সোনালী ব্যাংক পিএলসি জিয়া পরিষদের উদ্যোগে ইফতার বিতরণ ঠাকুরগাঁওয়ে ইসলামিক অলিম্পিয়াডের বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ

“আঁধার কাটছে”

সংবাদ দাতার নাম
  • সময় : শনিবার, ৩০ মে, ২০২০
  • ৬৫০ জন পড়েছেন

সারওয়ার চৌধুরী

“আঁধার কাটছে”

করোনা শব্দটা প্রথম শুনি এ বছরের জানুয়ারীর দিকে, যদিও এ ভাইরাসকে বলা হয় কোভিড-১৯, কিন্তু আমি ১৯শে এ সম্পর্কে কিছুই শুনিনি, এমনকি কিছু জানতামও না ! আমার মনেহয় নিউ ইয়র্ক তথা আমেরিকার বেশিরভাগ মানুষেরই এ ব্যপারে কোন ধারণাই ছিলনা। ফেব্রুয়ারি থেকে শব্দটা বেশি বেশি করে উচ্চারিত হচ্ছিল, চীন থেকে করোনার বিভিন্ন খবর আসছিল ! মার্চের প্রথম দিকে মুলত আমাদের নিউইয়র্কে ব্যাপকভাবে শব্দটা আলোচিত হচ্ছিল এবং সেই সাথে আক্রমণের ছোবলটাও একটু একটু করে পরিধি বিস্তার করছিল ! অনেক আলোচনা সমালোচনা আর দেন দরবারের পর মার্চের সাত তারিখে নিউ ইয়র্ক স্টেট গভর্নর এন্ড্রো কুমো স্টেট ইমার্জেন্সী ঘোষণা করলেন ! মার্চের ২২ তারিখ থেকে শুরু হল লকডাউন, স্কুলগুলো বন্ধ করে দেয়া হল,হোটেল মোটেল বন্ধ করা হল, রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুধুমাত্র ডেলিভারীর মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হল, টুরিস্ট স্পটগুলো বন্ধ করে দেয়া হল — সাথে সাথে প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর নিউ নিয়র্ক সিটি যেন অনেকটা ভুতুড়ে এক শহরে পরিণত হল, সিটির ব্যস্ততম ব্যবসায়িক বরো ম্যানহাটন উচু উচু বিল্ডিংগুলো সব হারানোর বুক ভাঙা বেদনা নিয়ে যেন দাঁড়িয়ে রইলো অনাথের মত।

চীন আর ইউরোপে রাক্ষুসী প্রভাববিস্তার করে অদৃশ্য করোনা তখন আমাদের নিউ ইয়র্কেও ফণা তুলা শুরু করলো, প্রতি মুহূর্তেই মৃত্যু আর আক্রান্ত সংবাদের আপডেট সংখ্যা বাড়ছিল, শত শত থেকে হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিনই মারা যাচ্ছিল, মনে হচ্ছিল মৃত্যু যেন একদিন থেকে পরবর্তী দিনে সংখ্যা বাড়াবার এক অসুরে প্রতিযোগিতায় নেমেছে ! খুব দ্রুতই মৃত্যু ছোবল হানা দেয়া শুরু করলো আমাদের বাংলাদেশী কমিউনিটিতে, পরিচিত মহলে, প্রিয়জন আর আপনজনের অন্দরে ! মৃত্যু সংখ্যার ডায়েরিতে বাংলাদেশীদের সংখ্যা যোগ হচ্ছিল দ্রুতগতিতে, পরিচিত অনেক প্রিয়মুখ গুলো অদৃশ্য হয়ে গেলেন কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই ! প্রতিরাতে বিছানায় যাওয়ার আগে ছটফট চিন্তা, না জানি আগামীকাল ঘুম থেকে উঠে কাকে হারানোর দুঃসংবাদ শুনতে হবে।

বাংলাদেশী কমিউনিটির অতি পরিচিত মুখ, ব্রঙ্কস বাংলাবাজার জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জনাব গিয়াস উদ্দিনের মৃত্যুতে আমি অনেকটাই বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম, উনার মৃত্যুর দশদিন আগেও স্টার্লিংয়ে উনার সাথে কথা হয়েছে, সদা হাস্যজ্জল মুখ খানা এমনি করে হারিয়ে যাবে, সেটা যেন মানতে খুব কষ্ট হচ্ছিল ! ব্রঙ্কসে বাংলাদেশীদের অবস্থান শক্তিশালী করার পেছনে গিয়াস উদ্দিনের অবদান অনস্বীকার্য ! বাংলা বাজার জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠার পেছনে উনার কার্যক্রম আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি ! ২০১৭ সালে ব্রঙ্কসের স্টিভেনসন হাইস্কুলে অনুষ্ঠিত মেয়র ব্লাজিওর টাউনহল মিটিংয়ে আমাদের উপস্থিতিতে উনি নিউ ইয়র্ক সিটির মসজিদ গুলোতে মাইকে আজান দেয়ার অনুমতি প্রদানের জন্য মেয়রের প্রতি আহবান জানান। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হওয়া স্বত্তেও মসজিদের স্বার্থে প্রতিদিন নামাজের পর উনি দান বাক্স হাতে নিজেই দাঁড়িয়ে যেতেন।

আমার এক সহকর্মী সেদিন স্টার্লিংয়ে আমাকে পেয়ে অঝোরে কাঁদছিলেন, মাত্র ছয়মাস আগে উনি উনার বাবা মাকে অনেকটা জোর করেই নিয়ে এসেছিলেন, এখানে উনাদের মনটা স্থির ছিলনা,দেশে যাওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করছিলেন, উনি ভেবেছিলেন কাগজপত্রের কিছু কাজ বাকী রয়েছে সেগুলো শেষ করেই আবার উনাদের দেশে পাঠিয়ে দেবেন, কিন্তু সেটা আর সম্ভব হলনা, করোনার গ্রাসে সবাইকে ছেড়ে বিদায় নিলেন বাবা, ভদ্রলোক আফসোস করে বলছিলেন উনার মৃতদেহটা পর্যন্ত দেশে পাঠানো সম্ভব হলনা, যে মাটির টানে ফিরে যাওয়ার জন্য উনার বাবা ছটফট করছিলেন, এমনকি উনার মা ও শেষবারের মত জীবন সাথীর মুখটাও দেখতে পারলেননা।

এভাবে আরও কত প্রিয়জন আর আপনজন নিমিষেই হারিয়ে গেলেন,কত সংসার যে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল — এমন এক কঠিন বাস্তবতা, কেউ কারও জন্যে কিছু করার মত পরিস্থিতিও ছিলনা !
এরই মধ্যে চলে এল পবিত্র রমজান, একেবারে ভিন্ন অনুভুতি আর অগণিত শোকের মাতমে মুহ্যমান ছিল সমগ্র কমিউনিটি পুরোটা রমজান জুড়ে ! মানুষগুলো যেন দাঁড়িয়েছিল জীবন আর মরণের মাঝখানে, গভীর কোন মৃত্যু খাদের কিনারায় — কে বাচবে, কে মরবে সেটা ছিল সবার অজানা, একেবারেই অনিশ্চিত।
গত কয়েকদিন ধরে পুব আকাশের করোনাচ্ছন্ন কালো মেঘ যেন অল্প অল্প করে সরতে শুরু করেছে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ লকডাউন তুলতে শুরু করেছে, আমেরিকাও সেই প্রক্রিয়ায় হাটছে ! নিউ ইয়র্কবাসী সহ পুরো আমেরিকাই অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করে আছে একটা সুন্দর জলমলে নির্মল বাতাসে আলোড়িত প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর চিরচেনা পরিবেশের জন্যে।।

সংবাদটি আপনার সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার দিন

এই ক্যাটাগরীর আরোও সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশেষ সংখ্যা

You cannot copy content of this page