মো.তোফাজ্জল হোসেন, বীরগঞ্জ(দিনাজপুর) সংবাদদাতাঃ নিজেই কুড়ি বছর আগে খাদ্য সংকটে বাবার বাড়িতে এসে বসবাস স্থাপন করেছিলেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ঝাড়বাড়ি এলাকার জমিলা বেগম। অভাবের কারণে স্ত্রী-সন্তান রেখে পালিয়ে যায় স্বামীও। কিন্তু নিজের জীবনের কাছে হার না মেনে হাতে তুলে নেন কসাইয়ের কাজ। গড়ে তোলেন মায়ের দোয়া মাংস ভান্ডার। দীর্ঘ কুড়ি বছর আগে এই জমিলা বেগম মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে, সন্তান নিয়ে মাঠের মধ্যে রাত্রী যাপন করে দিন কাটিয়েছেন। কিন্তু জীবন সংগ্রামে আজ সেই জমিলা বেগম নিজের পায়ে প্রতিষ্ঠিত একজন নারী। দেশ বিদেশে জমিলা বেগমকে এখন সবাই চিনে “জমিলা কসাই” নামে।
সেইদিন গুলো আর নেই। বড় ছেলে জহুরুল ইসলামকে সাথে নিয়ে কসাইয়ের কাজ করে দিন পাল্টে গেছে জমিলা বেগমের। করোনাভাইরাসে যখন চারিদিকে মানুষের আহাজারী, খেটে খাওয়া মানুষরা যখন খাদ্য সংকটে পড়েছে তখন সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তি উদ্যোগেও সহায়তা দেয়া হচ্ছে খাদ্য সামগ্রী। নিজের অভাবের কথা ভুলে যাননি জমিলা বেগম। করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ ৪০টি পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন তিনি।
বুধবার (০১ এপ্রিল) সকালে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ঝাড়বাড়ি এলাকায় অসহায় ৪০টি পরিবারের মাঝে চাল, ডাল, তেল, আলু দিয়ে সাহায্য করেছেন জমিলা বেগম। এসময় তার বড় ছেলে জহিরুল ইসলাম সাথে ছিলেন। জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মায়ের কষ্ট আমি দেখেছি। আমিও চাই অসহায় মানুষের পাশে মায়ের সাথে থাকতে। সবাই আমাদে জন্য দোয়া করবেন।’
জমিলা বেগম বলেন, ‘আমি আমার অতীতকে ভুলে যাইনি। আমি জানি একটা পরিবারের ইনকাম না থাকলে তাদের কি করুণ পরিণতি হয়। আমি নিজেও এসবের ভুক্তভোগী। কঠিন পরিশ্রম করে আজকে আমি সন্তানদের নিয়ে নিজের পায়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি। আমার সামর্থে ৪০ জন মানুষকে চাল, ডাল, তেল, আলু দেয়ার সুযোগ এসেছে আমি দিয়েছি। আগামীতেও আমি আমার এলাকার অসহায় গরিব মানুষের পাশে থাকব। আমি চেষ্টা করে যাব যতটুকু করার সামর্থ আছে ততটুকু করার। সবাই আমরা জন্য দোয়া করবেন।’
Leave a Reply