নিজস্ব প্রতিবেদক : বেনাপোলে আবারও কাস্টম কমিশনার কর্তৃক হতদরিদ্রদের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরণকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে ছামেনা খাতুন (৫৬) ও আল আমিন (১৭) নামে দুই নারী – কিশোর মারাত্বকভাবে রক্তাক্ত জখম হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় বেনাপোলের ছোটআঁচড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
আহত নারী বেনাপোল পৌরসভার ছোটআঁচড়া গ্রামের আনাছারের স্ত্রী এবং আহত কিশোর একই গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে। এবিষয়ে রক্তাক্ত ছামেনা ও আল আমিন পৃথকভাবে বাদি হয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা করতে গেলে উভয়ে অসচ্ছল হওয়ায় মানবিকতার দিকে খেয়াল করে এস আই জাকির হোসেন বিষয়টি আমলে নিয়ে তাদের ভিতর সমঝোতা করে দেন।
এ বিষয়ে ছোটআঁচড়া গ্রামের আহাদ আলীর স্ত্রী দেলোয়ারা বলেন তিনি বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তা মাজেদুর রহমানের বাসাবাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। সে সুবাদে সোমবার সন্ধায় তার গ্রামের অসচ্ছল মানুষের জন্য কিছু খাদ্যসামগ্রী বিতরণের কার্ড নেয়। যার একটি আহত ছামেনার ছেলের স্ত্রীকে দেয়। সেখানে সেও অসহায় হওয়ায় তাকে কেন আরেকটি কার্ড দেওয়া হয়নি তা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ছামেনার ছেলে তরিকুল ইসলাম তার ছেলে আল আমিনকে লাইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে কালো ঠোলা জখম করে। পরে তার ছেলের পক্ষ নিয়ে কে বা কারা ছামেনার মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে।
স্থানীয়রা বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার বেলাল হোসেনের উদ্যোগে এলাকার শতাধীক পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। যা সমাজের জনপ্রতিনিধি বা নেতৃত্বদানকারি এমন কোন দ্বায়িত্বশীল মানুষদের মাধ্যমে না দিয়ে তাদের মনগড়া নিয়মে বিলি করায় এমন রক্তাক্ত জখমের মতো ঘটনা ঘটল।
এ বিষয়ে বেনাপোল পোর্ট থানার এসআই এবং দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতাকারি কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃক অসচ্ছলদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের ঘটনায় ছোটআঁচড়া গ্রামের হতদরিদ্র কয়েক পরিবারের মাঝে সংঘর্ষ হয়। এতে এক নারীর মাথা ফেটে রক্তাক্ত জখম হওয়াসহ আরেক কিশোরের কপালের কোণে কালো ফোলা জখম হয়। যা নিয়ে দুটি পক্ষই মামলা করতে আসে। এসময় গ্রামবাসীরা আপোষ মিমাংশার কথা বললে মানবিকতার দিক বিবেচনা করে স্থানীয় মাতবরদের উপস্থিতিতে দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লখ্য, গত ১ ও ২ এপ্রিল বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী নিজের ইচ্ছামত খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করতে গিয়ে লোক সমাগমের ঘটনা ঘটে। যেখানে সামাজিক দুরত্ব বজায় না থাকায় উপকারভোগীদের সাহায্য পাওয়ার উপকারিতার চেয়ে মহামরী করোনা ভাইরাস আক্রান্তের ভয়াবহতা বেশি থাকায় আতঙ্কে শিহরে ওঠেন জনতা। যা এলাকার সংবাদ কর্মীদেরর জানালে লোক সমাগমের চিত্রসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এনিয়ে সংবাদকর্মীদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে একই দিন সন্ধ্যায় উক্ত সংবাদ কর্মীদের নামে তিনি বেনাপোল পোর্ট থানায় সাধারণ ডায়েরীসহ বেলাল হোসাইন নামে ফেসবুক আইডিতে উস্কানিমূলক কথা ও সংবাদকর্মীদেন চিহ্নিতকরণ শেষে মামলার হুমকি দেন। যা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় চলছে।
মোঃ মাসুদুর রহমান শেখ
বেনাপোল যশোর
৯/০৪/২০২০
Leave a Reply