রামগড়(খাগড়াছড়ি) উপজেলা সংবাদদাতাঃ করোনা ভাইরাসের কারণে দেশব্যাপী লকডাউনের মধ্যেও
মৃত্যুকে বাজি রেখে ঢাকা, কুমিল্লা, ফেনী থেকে খাগড়াছড়ি- রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন উপজেলার লোকজন এলাকায় নিজ নিজ গ্রামে ফিরছেন জীবনবাজি রেখে বিভিন্ন কারখানা-ফ্যাক্টরিতে কর্মরত শত শত কর্মজীবী বর্তমানে কর্মহীন মানুষ। কিন্তু ফিরতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে এবং আটকা পড়ছেন বিভিন্ন স্থানে।
ইতিমধ্যে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে খাগড়াছড়িতে প্রবেশ পথগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে জেলার রামগড় সীমান্ত এলাকায় আটকে দেওয়া হয়েছে কয়েকশত কর্মজীবীকে। আটকে পড়াদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু গর্ভবতী মা।
বর্তমানে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে করোনা ভাইরাস জনিত নিজ জেলা ও উপজেলাতে করোনা মুক্ত রাখতে তাদেরকে খাগড়াছড়িতে নিজ নিজ বাড়িতে যেতে দেয়া হচ্ছে না, আবার শহরে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আটকে পড়া লোকজন বর্তমানে উভয় সংকটের মধ্যে রয়েছেন।
এদিকে রামগড় উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনী এবং পুলিশ এবং স্বাস্থ্যবিভাগ মানবিক কারনে আটকা পড়া দুইজন গর্ভবতী মাকে বিশেষ বিবেচনায় তাদের নিজ দায়িত্বে অভিভাবকসসহ তাদের বাসাবাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
বৃহঃবার (১৬ এপ্রিল) সকালে আটকে পড়া পানছড়ি উপজেলা একযুবকের সাথে কথা বলে জানাযায়- করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে সরকার ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধির পাশাপাশি বিজিএমইএ’র কারখানা বন্ধ রাখাসহ বেতন না পাওয়ায় এসব কর্মজীবী মানুষ অর্থসংকটের কারণে শহরে থাকতে পারছে না। বাধ্য হয়ে গ্রামে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।
এদিকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সামাজিক-শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হলেও আটকে থাকা এসব মানুষগুলোকে রাখা হয়েছে গাদাগাদি করে। ফলে ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি আরো বাড়ছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। প্রশাসনের এবিযয়ে পরবর্তীত্বে সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
১৭ এপ্রিল রাতে ঢাকা,নারায়নগঞ্জ,কুমিল্লা, ফেনী হতে মাইক্রোবাস,ট্রাক, রিজার্ভ করে আসা নারী-পুরুষ আগত যাত্রীদের আটকেদেয় প্রশাসন।এদিকে বৃহঃবার(১৬এপ্রিল) আটকেদেয়া ১৫৪জন যাত্রীকে নিজনিজ উপজেলার চেয়ারম্যান ও ইউএনও’র সাথে যোগাযোগের পর জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ,ন,ম বদরুদ্দোজা রামগড় স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় স্ব-স্ব বাড়িতে হোম কোয়ারাইন্টানে থাকার পরামর্শ দিয়ে নিজ নিজ গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবিষয়ে ইউএনও আ,ন,ম বদরুদ্দোজা এ প্রতিনিধিকে বলেন- করোনা ভাইরাস রোদে গনপরিবহনসহ জনসাধারন সমাগম বন্ধ থাকলেও প্রতিদিন নানা কৌশলে মানুষ শহরের প্রবেশ মূখ রামগড় হয়ে খাগড়াছড়ি- রাঙামাটির বিভিন্ন উপজেলার গ্রাম গঞ্জে প্রবেশ করছে । ঘরমুখি মানুষদের সাময়িক কষ্ট হলেও সকলের মঙ্গলের জন্য যাত্রীদের ঠেকাতে এধরনের ব্যবস্থা করতে হয়েছে বলে জানান।
পরিবারের পক্ষ থেকে আটকে পড়া অসহায় নারী- পুরুষ শিশুসহ কর্মহীন অসহায় মানুষদের কথা বিবেচনা করে শুকনো খাবার পানি এবং খাদ্য সরবরাহ করে আবার নিজ নিজ গ্রামে বাস ট্রাক যোগে পৌঁছানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করায় যাত্রীদের পক্ষ থেকে যথাযথ কতৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান ।
এদিকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ২৯৮নং আসনের সাংসদ ও ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান ও খাগড়াছড়ি জেলা আ’লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা’র নির্দেশনায় আটকে পড়া অসহায় কর্মহীন নারী- পুরুষ ও শিশুদের পাশে মানবিক বিবেচনায় শুকনা খাবার, পানীয় জল ও রাতের খাবার এর ব্যবস্থা করে মানবতান হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সংরক্ষিত মহিলা সাংসদ বাসন্তী চাকমা, উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারী, উপজেলা প্রশাসন, রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ সামসুজ্জামান এবং পৌর মেয়র শাহজাহান কাজী রিপন।
এতে দিন শেষে ভোর রাত পযর্ন্ত জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি সহকারী কমিশনার (ভূমি)সজীব কান্তি রুদ্র, স্থানীয় সংবাদকর্মী ও রামগড় উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি নিজাম উদ্দিন-সহ-সভাপতি সাহাদৎ হোসেন কিরণ ,সাধারণ সম্পাদক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক রতন বৈষ্ণব ত্রিপুরা, সদস্য-মোঃ মাসুদ, যুবরীগ নেতা কাজী শিমুল, দুপ্রক সভাপতি শাহআলম, যুব রেড ক্রিসেট রামগড় ইউনিট,যৌথ আইন-শৃংখলা বাহিনীসহ আরো নাম না জানা অনেকেই নিরলস ভাবে কাজ করে।
এদিকে ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যা পর্যন্ত রামগড় প্রবেশ মুকে প্রায় দুইশত নারী পুরুষ শিশু আটকে আছে। পর্যায়ক্রমে তাদেরকে স্বস্ব উপজেলার সংশিষ্টকর্তপক্ষের দায়িত্বে পাঠানো হচ্ছে।
ছবি সংযুক্তঃ
রতন বৈষ্ণব ত্রিপুরা,রামগড়(খাগড়াছড়ি)উপজেলা সংবাদদাতা,01815644728/01553485131, তাং- 17/4/2020ইং।
Leave a Reply