আব্দুর রউফ রুবেল, গাজীপুরঃ
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও গাজীপুর ১ আসনের সাংসদ আ ক ম মোজাম্মেল হকের গানম্যান পুলিশের এএসআই কিশোর কুমারের গুলিতে এক যুবক নিহতের পর গুলিবিদ্ধ অপর যুবকও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
ঘটনার ৮ দিন পর শুক্রবার(২৪ এপ্রিল) ভোর ৩ টার দিকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মাদক ও পরকীয়ার জেরেই এ নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে।
নিহত মাহিম উদ্দিন (৩২) টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার আজগানা ডাবলাপাড়া এলাকার। এবং অপর নিহত হলেন, আজগানা গ্রামের আব্দুল সবুরের ছেলে মো. শহিদ (৩১)।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও গাজীপুর ১ আসনের সাংসদ আ ক ম মোজাম্মেল হকের গানম্যান পুলিশের এএসআই কিশোর কুমার (৩৫) এ নৃশংস হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে।
মন্ত্রীর গানম্যান এএসআই কিশোর কুমার কালিয়াকৈর উপজেলার কুতুবদিয়া এলাকার নারায়ন কুমারের ছেলে। সে সুবাধে মন্ত্রীর গানম্যান কিশোরের সীমান্তবর্তী এলাকা টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার এলাকার আজগানা মো. শহিদ ও পাশের ডাবলাপাড়া এলাকার মো. মহিম উদ্দিন বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। তারা তিনজনই মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। কালিয়াকৈর উপজেলার কুতুবদিয়া এলাকায় তারা আড্ডা দিতেন এবং নেশা করে বেড়াতেন। মাদক ও পরকীয়ার সন্দেহের জেরেই গত ১৬ এপ্রিল রাত পৌণে ১০টার দিকে কুতুবদিয়া এলাকায় একটি পতিত জমিতে এএসআই কিশোর হঠাৎই তাদের উপর গুলি ছুড়ে। পরে মন্ত্রীর গানম্যান কিশোর দৌড়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মো. শহীদ মারা যান এবং গুলিবিদ্ধ মহিমকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। ওই হাসপাতালে ৮ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে শুক্রবার ভোররাত ৩টার দিকে মাহিমও মারা যান।
এদিকে এ নৃশংস হত্যাকান্ডের পর মন্ত্রীর গানম্যান পুলিশের এএসআই কিশোর পালিয়ে গেলেও অভিযান চালিয়ে গত ১৭ এপ্রিল দুপুরে সাভারের আশুলিয়া শিমুলিয়া এলাকা থেকে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে ৬ রাউন্ড গুলি ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত শহীদের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে ও পুলিশ বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।
কালিয়াকৈর থানার ওসি (অপারেশন) মনিরুজ্জামান খান গুলিবিদ্ধ অপর যুবক মহিম উদ্দিনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মাদক ও পরকীয়ার জেরেই এএসআই কিশোর এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। হত্যাকান্ড ঘটনানোর জন্যই সে অন্যত্র থেকে গুলি ব্যবস্থা করে ছিল। তবে এএসআই কিশোরকে গ্রেপ্তারের পর গাজীপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া তাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
Leave a Reply