স্টাফ রিপোর্টারঃ সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের নুরগঞ্জ (পেচারপাড়া ) গ্রামের একটি নিম্ন মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারের মেয়ে মরিয়ম এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে। মরিয়ম ২০১৮ সালের জেএসসি পরীক্ষায় একই স্কুল থেকে অংশ গ্রহণ করে জিপিএ-৫ অর্জন করেছে।এছাড়া ২০১৪ সালের পিএসসি পরীক্ষায় বড়হর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অংশ গ্রহণ করে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছিল।তাদের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বাবা আব্দুল মান্নান একজন দরিদ্র কৃষক ও মা মিনা বেগম একজন আদর্শ গৃহিনী। ভাই বিহীন সংসারে ৪ বোনের মধ্যে মরিয়ম সবার ছোট।কৃষক বাবার সামান্য আয়ের পাশাপাশি মায়ের হাস- মুরগি গরু ছাগল পালন থেকে যে আয় হয় তা দিয়েই চলে তাদের অভাবের সংসার আর পড়ালেখা।ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন থাকলেও ভাই বিহীন চার বোনের দরিদ্র কৃষক বাবার সামান্য আয়ে পুরন হয়নি সে আশা।তবে মেডিকেল সেক্টরের নার্সিং ও প্যাথলজিতে অধ্যয়ন করে কিছুটা দুধের সাধ ঘোলে মিটিয়েছে এই অসহায় পরিবারের মেয়েরা।বড়বোন মনিরা খাতুন সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটে অধ্যয়ন শেষ করে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসাবে কর্মরত আছে উল্লাপাড়া উপজেলা হেলথ্ কমপ্লেক্সে। মেজো বোন লাকী খাতুন প্যাথলজিতে ডিপ্লোমা শেষ করে নিয়োগ না থাকায় বেকার হয়ে বসে আছে স্বামীর সংসারে।আর সেজো বোন হালিমা তুজ সাদিয়া এইচ এসসি পাশ করে অধ্যয়নরত আছে কুষ্টিয়া নার্সিং ইনস্টিটিউটে।সদ্য জিপিএ ৫ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাশ করা মরিয়মের ইচ্ছা একজন ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করার।কিন্তু বড় বাধা হয়ে দাড়াতে পারে অভাব অনটনের সংসার।তবুও হাল না ছেড়ে একজন ডাক্তার হয়ে মানবতার সেবা করার স্বপ্নের কথা জানায় সদ্য এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়া উল্লাপাড়ার মরিয়ম।মরিয়মের বাবা আব্দুল মান্নান জানান, চার মেয়ের লেহাপড়া হরার ন্যাগা খুপ কষ্ট অছে। আর মা মিনা বেগম জানান,আগে সংসার নিয়ে খারাপ আছিলাম। এহন মেয়েদের পড়াতে পেরে আমরা খুশি।প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ ৫ প্রাপ্ত মেধাবী মরিয়মের এসএসসি পাশ করার মধ্য দিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলায় প্রথম এমন একটি দরিদ্র পরিবারে চার বোনের শিক্ষিত হবার গল্প বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গৌরবময় দৃষ্টান্ত বলে মনে করেন মরিয়মের ভগ্নিপতি বৃক্ষপ্রেমী আবুল হোসেন। বড়হর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম জানান,মরিয়ম দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হলেও অত্যন্ত মেধাবী ও পরিশ্রমী।তার ভালো ফলাফলে আমরা সবাই খুশি।ইতিপূর্বে তার বড় তিন বোন আমার প্রতিষ্ঠান থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাশ করেছে।আমি তাদের সবার সুখী ও সুন্দর জীবন কামনা করছি।
Leave a Reply