আমরা যখন রাতে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, পুলিশ তখন নির্ঘুম চোখে পাহারা দেয় দেশ,
আমরা যখন প্রিয়জনের পাশে বসে গল্প করি, পুলিশ তখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত। কত কষ্টসহিষ্ণু তাদের জীবন।
একজন পুলিশ সদস্যের জীবনে যেমন সাহসিকতার গল্প আছে, তেমনি বিড়ম্বনার গল্পও আছে, তেমনি মানবিকতা ও রূঢ়তার গল্পও আছে।
তাদের অমানবিক প্ররিশ্রমের গল্পটি লেখে শেষ করা যাবেনা,
তাদের কখনো ১২ ঘন্টা, কখনো ১৬ ঘন্টা ও ১৮ ঘন্টা ও ডিউটি করতে হয়, ডিউটির কোনো ধারাবাধা নিয়ম নেই বল্লেই চলে,
তাদের জীবনে কোনো উৎসব নেই, আমরা যখন উৎসব করি তাদেরকে পাহার দিতে হয়, কেননা উৎসব করতে গিয়ে আবার যেন কোনো কিশোরী মেয়ে দর্শিত হয়ে না যায়।
তাদের কখনো কোনো প্রকৃতিক বিপর্যয় নেই, কখনো প্রচন্ড গরমে ইউনিফর্ম পরে ঘামে ভিজে আবার কখনো বৃষ্টিতে ভিজে দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত থাকতে হয়।
রাস্তার অলিগলি থেকে শুরুকরে বঙ্গভবন, গণভবন, মসজিদ, মন্দির, গির্জা, কোথায় পাহারা দিতে হনা তাদের।
হাস্পাতালের অসুস্থ রোগী থেকে মৃত লাশের পাশে কিংবা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেল লাশের দাফন করানো, কৃষকদের ধান কাটায়, মাঠে ময়দানে পাড়া মহল্লায় হাটবাজারে সবখানে পুলিশ সদস্যরা অক্লান্ত ভাবে প্ররিশ্রম করে যাচ্ছেন, পার্থক্যটা হলো, আমরা মহামারী করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ঘরে আর পুলিশ ভাইয়েরা বাহিরে,
আমরা প্রিয়জনের সান্নিধ্যে আর উনারা জীবনের ঝুঁকিতে।
তারা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছে আর আমরা অসচেতনতায় আক্রান্ত হচ্ছি।
আমরা যখন প্রিয়জনের লাশ ছুয়ে দেখতে পারিনা, তখন আমাদের লাশ কাধে বাহন করতে গিয়ে পুলিশ ভাইয়েরা আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের কিছুই করার নাই, কেননা তারা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ পালন করাই তাদের দায়িত্ব।
যেকোনো সময় যেকোনো মুহূর্তে ছুটে আসতে হয় ঘর থেকে, তাদেরওতো ঘরে অসুস্থ মা – বাবা এবং স্ত্রী সন্তান থাকতে পারে।
তার পরেও আমরা পুলিশকে কারণে অকারণে অপছন্দ করি,
তাদেরকে নিয়ে নেতিবাচক সমালোচনা করি, তাদের নিয়ে খারাপ ধারণা পোষণ করি, তারাওতো রক্তে মাংসে গড়া মানুষ, তাদেরওতো আবেগ আছে, অনুভূতি আছে, সম্মান পাওয়ার অধিকার আছে, আমরা যেন তাদেরকে সম্মান প্রদর্শন করি, সহযোগিতা করি, মানুষের জানমাল ও সম্পদের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা এই পুলিশ নামক মানুষদের ভালোবেসে সম্মান প্রদর্শন করতে পারি।
আসুন আমরা রাস্তার প্রতিটি মোড়ে মোড়ে ইউনিফর্ম পরে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ ভাইদের সালাম দিয়ে সম্মান প্রদর্শন করি এবং তাদের ভালো কাজের জন্য প্রশংসা ও মূল্যায়ন করি,
এই মহামারি দুর্যোগ মোকাবেলায় জনগণের পাশে বুক বেধে দাড়ানোর জন্য তাদের পুরস্কৃত করি, তাদের উৎসাহিত করি,
পুলিশকেই আমরা বন্ধু ভাবতে পারি।
রাষ্ট্রের এই অতন্দ্র প্রহরী পুলিশকে যেকোনো সংকট, সংগ্রামে দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা সাথী করে পথ চলতে চাই, আসুন বিশ্ব মহামারী করোনা দুর্যোগের মোকাবিলায় আমরা দলবল নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে যুদ্ধ করি, সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলি, এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিনীত ভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি পুলিশদের রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা আরও বাড়াতে হবে, তাদের নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে।
মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষার মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে,
আসুন পুলিশকে ঘৃণার চোখে নয়, ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার চোখ দিয়ে তাদের দিকে তাকাই, সবাই মিলে বদলে দিই সমাজ এবং দেশ,
পুলিশকে সাথে নিয়ে সবাই মিলে ক্ষুধা দুর্নীতি মুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলি।
লেখক:
ইয়াসিম মিয়া বাবু,
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, অস্ট্রিয়া আওয়ামী যুবলীগ।
Leave a Reply