1. admin@protidinershomoy.com : admin :
  2. nasimriyad24@gmail.com : ডেস্ক রিপোর্ট : ডেস্ক রিপোর্ট
  3. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১১ পূর্বাহ্ন

পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষ রোপনে উৎসাহিত করছেন মাহাবুব পলাশ।

শাহিন রেজা
  • সময় : বৃহস্পতিবার, ৪ জুন, ২০২০
  • ৫৬৩ জন পড়েছেন

শাহিন রেজা: আজ ৫ জুন আন্তর্জাতিক পরিবেশ দিবস। এ দিবসে এমন একজন মানুষের গল্প শোনাবে যে মানুষটি পরিবেশের ভারসাম্যতা রক্ষায় দীর্ঘ দেড় যুগধরে সবুজ বনায়নের জন্য দিনরাত কাজ করছেন এবং সাধারণ মানুষকে বৃক্ষ রোপণে উৎসাহিত করে চলেছেন। এমনকি যে মানুষটি অন্যের মুখে হাঁসি ফোঁটানোর জন্য নিজের জীবনের সকল সুখ ত্যাগ করে পরিবেশ সুরক্ষার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। শুধু তাই নয় পরিবেশের ভারসাম্যতা রক্ষায় প্রিয় এ মানুষটি বৃক্ষের সাথে মিশে থেকে তার মেধা মননের ভিত্তিতে বৃক্ষ রোপণ ও বৃক্ষ পরিচর্যায় সাধারণ মানুষকে উদ্ধুদ্ধ করে চলেছেন। পরিবেশের ভারসাম্যতা রক্ষায় বৃক্ষের কোন বিকল্প নেই। বৃক্ষ শুধু পরিবেশই সুরক্ষা করেনা,বৃক্ষ মানুষকে সফলতা ও সমৃদ্ধিও দান করে। সিরাজগঞ্জে পরিবেশ সুরক্ষার ক্ষেত্রে সমাজে সবুজ বিপ্লবের মডেল হিসেবে যে মানুষটি ইতোমধ্যে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন তিনি হলেন বৃক্ষপ্রেমি মাহবুব ইসলাম পলাশ।

বৃক্ষের সাথে মিশে থাকা এ বৃক্ষপ্রেমি মাহবুব ইসলাম পলাশ এর জন্ম সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার বাজার ভদ্রঘাট এলাকার শেখপাড়ায়। পেশায় তিনি একজন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা। ছোট বেলা থেকেই বৃক্ষের প্রতি রয়েছে তার ভালোবাসা। এই ভালোবাসাই
তাকে পরবর্তীতে বৃক্ষপ্রেমে জড়িয়ে ফেলে। বৃক্ষের প্রেমে জড়িয়ে পড়া এই মানুষটিকে সকল সময় তাড়িয়ে বেড়াতো বৃক্ষ কিন্তু বৃক্ষ রোপণে ছিল না তার কোন অর্থ তবে ছিল তার তার অদম্য ও শক্ত মনোবল। এই শক্ত মনে বলে বলিয়ান হয়েই শুরুতে তিনি তার মায়ের দেওয়া টিফিনের টাকা জমিয়ে গাছ কিনে ব ক্ষ রোপণ শুরু করেন। ছাত্র জীবন থেকেই গাছ কেনা এবং রোপণ করাই ছিল তার নেশা। সে নেশা থেকেই তিনি ২০০৩ সাল থেকে বৃক্ষের প্রতি ঝুঁকে পড়েন। এমনকি তিনি তার নিজের বাড়ির চারিদিকে লাগানো অসংখ্য ইউক্যালিপ্টাস গাছ পরিবেশের অনুকূল নয় ভেবে তিনি ২০০৭ সালে তার পুকুরের পাশে প্রায় এক-একর জায়গার উপর নিজের বেতনের টাকা দিয়ে বাড়ির আশপাশ,রাস্তাঘাট ও বাড়ি সংলগ্ন জমিতে বৃক্ষ রোপন করেন নানা প্রজাতির বিরল ও বিলুপ্ত প্রায় গাছের চারা।

এছাড়া পাখি যেন বাসা করতে পারে এমন এমন চিন্তা ভাবনা তিনি মাথায় রেখে ২০০৩ সালে আম,জাম ও নারিকেল গাছ দিয়ে বাগানের সমৃদ্ধি বৃদ্ধি করেন। এভাবে ক্রমান্বয়ে বাগানে বৃদ্ধি পেতে থাকে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ। বর্তমানে তার বাগানে রয়েছে প্রায় ৩০০ প্রজাতির গাছ। যার মধ্যে ২৪৫ প্রজাতির গাছই বিলুপ্ত। এমনকি ২০১১ সালে বন বিভাগ যে ৪৫ প্রজাতির গাছ মহাবিপন্ন হিসেবে ঘোষণা করেন,তার ৪০ প্রজাতির গাছই রয়েছে এই বাগানে।

এই দৃষ্টিনন্দন বাগানের ভিতরে রয়েছে সুন্দর বনের সুন্দরী গোলপাতা,কৃপা, খোলসা,কাকড়া,উড়া এবং গড়ানসহ ৯ ধরণের লবণ পানি ও জোয়ার ভাটার গাছ। যে গাছগুলো সাধারণতো সুন্দর বন ছাড়া অন্য কোথায়ও এর দেখা মেলে না। অদৃশ্য এ সকল গাছ সাধারণতো অনেক দামী। অন্যত্র বিলুপ্ত হলেও এই বাগানের ভিতরে সংরক্ষিত সুন্দরী গাছ দিয়ে এক সময় তৈরি হতো সৌখিন নৌকা আর গোলপাতা গাছ দিয়ে তৈরি হতো ঘরের ছাউনি। এ বাগানে আরো রয়েছে আদিম যুগের ডুগডুগি গাছ। এই গাছের ফল দিয়েই তৈরি করা হতো বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র এবং ডুগডুগি। এছাড়াও বাগানে রয়েছে দায়ফুল,লাইলি মজনি,হলুদ পলাশ,লাল পলাশ,কনকচাঁপা,ঝুমকোবাদি,কনকসুধা, কুসুম,লালচিতা,নীলচিতা,হলুদ চিতা,নীল পুরুল,অনন্ত লতা,বাসর লতা,কুমারী ও
চম্পা লতা ফুল গাছসহ ২৬ ধরনের বিরল প্রজাতির ফুল গাছ।

আজকে মানুষ তার নিজ প্রয়োজনে চারদিকের বন জঙ্গল উজাড় করে পৃথিবীর ফুসফুস আমাজন ধ্বংস করে পৃথিবীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে ফেলছে এবং পরিবেশ বিজ্ঞানীদের কপালে চিন্তার ভাজ ফেলেছে এবং সারাবিশ্ব পরিবেশ রক্ষায় যখন তোলপাড় শুরু করে দিয়েছে ঠিক সেই সময় মাহবুব ইসলাম পলাশ নিরবে নিভৃতে সম্পূর্ণ নিজ অর্থায়নে পরিচালনা করে যাচ্ছেন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। তার বৃক্ষরোপণ কর্মসুচি থেমে নেই। চলমান তার কর্মকান্ড সর্বমহলে আজ প্রশংসিত হয়েছে। বৃক্ষপ্রেমি এ মানুষটি নিজে সবুজ বনায়ন আর বৃক্ষ রোপণ করে থেমে থাকেননি। দেশ সেরা রাজশাহী কলেজে রয়েছে তার দেওয়া উপহার দুর্লভ বৃক্ষ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় দেশ সেরা রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষের হাতে তিনি দুর্লভ ১৩ প্রজাতির ২২টি গাছের চারা হস্তান্তর করেছেন। এসব দুর্লভ চারার মধ্যে রয়েছে বান্দবহুলা,সিভিট ভুঁইকদম,ধূপ,আগর,বাটনা,চিত্রাশি ইত্যাদি।

এদিকে সারাদিন পরিশ্রম করে সবাই যখন বাড়ি ফিরে পরিবার পরিজন নিয়ে সময় কাটান তখন এই মানুষটি নিজের আরাম আয়েশের কথা না ভেবে গভীর রাত পর্যন্ত জেগে বাড়ি তৈরীর নকশা করে যে অর্থ আয় করেন তার পুরোটাই ব্যয় করেন সমাজ বিনির্মানে মানুষের কল্যাণে সবুজ বনায়নের জন্য।

এ বিষয়ে মাহবুব ইসলাম পলাশ বলেন, গাছ লাগানো আমার নেশা। বাংলাদেশ থেকে গাছ গুলো এক সময় হারিয়ে যাবে কিন্তু যদি সংরক্ষিত থাকে তাহলে এই গাছগুলো কখনো আর হারাবে না। তাই এ ধারা অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি আমি এই বিরল প্রজাতির গাছগুলো সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে চাই এবং পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সকলের পাশে থাকতে চাই। কেননা গাছের কোন বিকল্প নেই কারণ গাছ আমাদের প্রকৃত বন্ধু। তাই আসুন আমরা সবাই গাছ লাগাই এবং পরিবেশ বাঁচাই।

সংবাদটি আপনার সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার দিন

এই ক্যাটাগরীর আরোও সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশেষ সংখ্যা

%d bloggers like this: