1. admin@protidinershomoy.com : admin :
  2. nasimriyad24@gmail.com : ডেস্ক রিপোর্ট : ডেস্ক রিপোর্ট
  3. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ঠাকুরগাঁওয়ে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন, থানায় অভিযোগ ঠাকুরগাঁওয়ে রোজাদার ও শিশুদের মাঝে ইফতার বিতরণ ঠাকুরগাঁও অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আরজেএফ’র ইফতার ও দোয়া  মাহফিল অনুষ্ঠিত রাজশাহী মহানগর আ’লীগের উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস পালিত পীরগঞ্জে ভোমরাদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত রাজশাহী মহানগর আ’লীগের ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন এতিম শিশুদের নিয়ে এডিবিবিএস এর  ইফতার ও দোয়া মাহফিল ঠাকুরগাঁওয়ে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ফিচার রাইটার্স আয়োজিত “ফেলে আসা ঈদ আনন্দ”

মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ,জবি প্রতিনিধি
  • সময় : বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২০
  • ৭৮১ জন পড়েছেন

মুসলমানদের শ্রেষ্ঠ আনন্দ আয়োজন ঈদ উৎসব। ঈদ মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব হলেও জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের প্রতিটি মানুষ এই উৎসবে শামিল হয়। সব দুঃখ-কষ্ট ভুলে যে যার সাধ্যমতো খুশিতে মেতে ওঠে। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উৎসব দুটির পেছনেই রয়েছে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণমুখী কাজ ও ত্যাগের উজ্জ্বল মহিমা। ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ফিচার রাইটার্স ফেসবুক গ্রুপের আয়োজনে জবি শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ফেলে আসা ঈদ আনন্দ’ নামে এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। প্রতিযোগীতায় জবি শিক্ষার্থীরা তাদের জীবনে অতীতে ফেলে আসা ঈদের দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করে নিজের মতো করে বিভিন্ন ধরণের সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে শেয়ার করেছেন। তাদের মধ্য থেকে সেরা লিখা গুলো নিয়ে পাঠকদের জন্য “ফেলে আসা ঈদ আনন্দ” তুলে ধরেছেন মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ।

ঈদ যেন এক অভিনব উল্লাস, ঝলকানো আলোক রশ্মি। করোনা দুর্যোগে আজকের ঈদ শহরের প্রকোষ্ঠ কুঠিরে বন্দী! মনে পড়ে যায়, সেই গ্রামে ফেলে আসা প্রতিটা ঈদের কথা। ঈদের ৩-৪দিন আগেই দাদুর বাড়িতে যেতাম, বাড়িতে গিয়েই প্রথম কাজ হলো ঈদের জামা লুকিয়ে রাখা; কেউ জামা দেখলে তো সব আনন্দ শেষ! একে-একে সব চাচাতো ভাই-বোনরা আসতো। গল্প-আড্ডা-খাবার ছিনিয়ে নেওয়া এইনিয়েই কেটে যেত দুটো দিন। ঈদ সন্ধ্যায় সবাই মেহেদী পড়তাম বড় আপুদের কাছে। কার নকশা কত সুন্দর, আকর্ষণীয়! এ নিয়েই চলত তর্ক। এরপর জমজমাট গান আড্ডা, ঘুমোতে-ঘুমোতে রাত ২টা। ঈদের ভোরে উঠতাম, গোসল সেরে নতুন জামা পড়ে আতর হাতে বেরুতাম, সবাইকে মাখাতাম, সালামি আদায় করতাম; কার সালামি বেশি হবে এ নিয়ে চলতো প্রতিযোগীতা। এরপর নামাজ শেষে কোরবানিতে ২দিন ঘাস-খড় খাওয়ানো গোরুটার জন্য আনন্দের পাশাপাশি মায়াও হতো। তারপর দাদীর হাতের অপূর্ব স্বাদের পিঠা-পায়েস-বিরিয়ানী আরোও কত কি! বিকেলবেলাটায় চাচ্চুদের সাথে মাংস নিয়ে যেতাম কাছের আত্মীয়দের বাড়িতে, আর দই-আইসক্রীমের জন্য বাহানা ধরতাম। দিনশেষে বাড়ির সবাই গল্প-আনন্দে মেতে উঠতাম। ভাবতে-ভাবতেই দু’চোখ ঝাপসা হয়, নেই আজ নতুন জামা; হাতে মেহেদী নেই, নেই প্রিয়-হাতগুলোর স্পর্শ! কেঁদে ওঠে প্রাণ, সবাই নিজ-নিজ কর্মস্থলে স্থবির! মুঠোয় বন্দী সময়গুলো সাজানো ফোনের জগতে আর কাটে না। মন চায় ওই নীল আকাশটার পাখি হতে!

রুকাইয়া মিজান (মিমি)
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
১৫তম ব্যাচ

আমার বয়স ১০ কি ১১ হবে। আমি ৫ম শ্রেণির ছাত্র। আমাদের বাড়ি কুমিল্লার দাঊদকান্দি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের মুকুন্দি গ্রামে। জন্মসূত্রে আমি এই গ্রামের স্হায়ী বাসিন্দা। বাবা ছিলেন তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) এর একজন সদস্য। সেই সুবাদে আমরা তখন ঠাকুরগাঁওয়ে থাকি। বাবা যখন ৮ম শ্রেণির ছাত্র তখন তিনি তার বাবাকে হারিয়েছেন। তাই দাদা শব্দটার সাথে পরিচয় থাকলেও দাদারা কেমন হয়, তাদের আদর, শাসন কেমন হয় তা দেখা হয়ে ওঠেনি। তাই দাদী যতদিন বেঁচে আছে তার সাথে জীবনের প্রতিটা ইদ কাটাতে চাই। এই ইচ্ছায়ই আমরা প্রতি ইদে গ্রামে সবাই একসাথে ইদ কাটাই তবে মাঝে মাঝে আব্বুকে ইদে কাছে পেতাম নাহ। প্রতিবারের ন্যায় সেবারও আমরা ইদে বাড়িতে গেলাম শুধু আব্বুকে ছাড়া। বাড়িতে তখন দাদী, চাচা ছিল। চাচা তখন ব্যবসা করত গ্রামেই থাকত। প্রতি ইদের চাঁদ রাতে তখন গ্রামে তারাবাতি, আতশবাজি এসবের ধুম থাকতই। সন্ধ্যার আকাশে তারাবাতি জ্বলতে দেখতাম চারিদিকে আতশবাজির শব্দে বোঝা যেতো আগামীকাল ইদ। প্রতি ইদে ইদের সালামি চাচার কাছ থেকে কুড়ি টাকা পেতাম। এই কুড়ি টাকাই তখন অনেক ছিল আমার কাছে। কুড়ি টাকা পেয়ে আমি খুব খুশি হতাম আর তা নিয়েই চাচার সাথে ইদের নামাজ পড়তে যেতাম। তখন ইদগাহের পাশের বসতো লটারির দোকান। লটারির মূল্য ছিল ৪ টাকা।পাঁচজন লটারি কিনলে তার ড্র হতো। লটারি বিজয়ী পুরস্কার হিসেবে পেত একটি তরল পানীয়। এটার জন্য দুইতিন বার ও লটারি কিনতাম। তখন ইদের আনন্দ ছিল অনেক।আজ বয়স বেড়েছে বড় হয়েছি, পরিবর্তিত হয়েছে অনেক কিছুই। জীবিকার তাগিদে চাচা আজ প্রবাসী। হয়তো এখন ইদে সালামি হিসেবে তার থেকে কয়েকগুন বেশি টাকা পাই। কিন্তু বিশ্বাস করুন সেই কুড়ি টাকার স্বাদ, লটারির স্বাদ আর চাঁদরাতের স্বাদ আজ পাই না যুগ এগিয়ে যাচ্ছে সেই সাথে পরিবর্তিত হচ্ছে সবকিছুই তার মাঝে হারিয়ে যাচ্ছে অনেক কিছুই তবে শুধু স্মৃতির পাতায় বাঁধা থেকে যায়।

মো: ফাহিম উদ্দিন পাটোয়ারী
ভূগোল ও পরিবেশ,
১২তম আবর্তন।

ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি। আর এই ঈদ দ্বিগুণ হয়ে ওঠে যদি সেইটা ঈদ-উল-আযহা হয়। ঈদ -উল- আযহাতে পশু কোরবানি করা হয়। আর পশু বাড়িতে আসা মানেই বাচ্চাদের মনের আনন্দ বয়ে আসা। আর সেই পশু যদি গরু হয় তবে তো আনন্দের সীমা থাকে না। ছোট বেলায় ঈদের আগের দিন অপেক্ষা করতাম কখন বাবা গরূ কিনে বাড়ি আসবে।গরু আনার পর গরূকে খড় পানি খেতে দেওয়া ছোট ভাইয়ের সাথে দাঁড়িয়ে গরূ দেখা সবকিছুতেই আনন্দ বয়ে যেত। সন্ধ্যায় দৌড়ে মাঠে গিয়ে চাঁদ দেখা বাজি ফোটানো বেশ মজা করা। হাতে মেহেদি লাগানো। বাবা এক হাতে মেহেদি দিয়ে দিত আর মা অন্য হাতে।ঈদের দিন সকালে নদীতে গোসল করার ‌মজাই ছিল অন্যরকম। তারপর নতুন ড্রেস পড়া। সবার থেকে ঈদ সেলামী নেওয়া। বাবা নামাজ পড়ে কখন‌ আসবে তার জন্য অপেক্ষা করা। আম্মুকে কাজে সাহায্য করা। বাবা নামাজ পড়ে এসে কোরবানি দিত‌ আনন্দের সাথে সবার‌‌ মধ্যে গোশত ভাগ করে দেওয়া হতো। বিকেলে কাজিনরা সবাই আসতো তাদের সাথে ঘুরতে যেতাম সন্ধ্যায় ‌নাচ গান করতাম। গানে সবসময়ই হেরে যাওয়ার মধ্যে ও আনন্দ ছিল। রাতে একসাথে খাওয়া দাওয়া শেষে লুডু খেলতাম। ঈদের দ্বিতীয় দিন মামা-মামীরা সবাই আসতো প্রচুর হৈচৈ আর আড্ডা দিতাম। সবাই নৌকায় ঘুরতে যেত কিন্তু আমি যাইতাম না ভয়ে। পরিবারের সবাই একসাথে অনেক ছবি তোলা হতো। তৃতীয় দিন নানুর বাড়িতে যাইতাম অনেক মজা করতাম। এইভাবেই আমার ঈদ কাটতো। কিন্তু এইবার এগুলো কিছুই হলো না। করোনা নামক ভাইরাস আমার সব আনন্দকে আমার থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। শুধু আমার থেকে না পুরো পৃথিবী থেকেই।

হিরা সুলতানা
একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস
১৪ তম আবর্তন।

একটা সময় ছিল যখন বাবার লম্বা শার্ট টা পরতাম আর সবাইকে বলতাম আমার হাত কই? হাত নাই। আরো কত শত শত বোকা বোকা প্রশ্ন! সবাই চেষ্টা করতো এই বোকা বোকা প্রশ্নগুলো উত্তর দেওয়ার। সেসময়ের দিনগুলো আলাদা ছিল। একদম অন্যরকম। সে সময়ের ঈদগুলোও ছিল অন্যরকম। ফেলে আসা সেসব দিনগুলো আর ফেলে আসার দিনগুলোর ঈদগুলোই ভাবায়। প্রতিটি মানুষের শৈশবের ঈদগুলোই বদহয় সবচেয়ে ভালো ঈদ। বয়স বাড়তে বাড়তে এসবের স্মৃতি মনে করেই তো মানুষ হেসে উঠে, কান্না করে ফেলে। স্মৃতিরপাতা খুলে আমিও সেসব ঈদগুলোই মনে করতে থাকি। ফেলে আসা শৈশবের ঈদগুলোর স্মৃতি গুলো আমাকে বরাবরই ভাবায়। এতো তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যাওয়ার কোন দরকার ছিল না। মানুষ বড় হতে হতে অনেক কিছুই হারিয়ে ফেলে। কতকিছুই হারিয়ে যায়। আমার ফেলে আসার ঈদগুলোর আনন্দ স্মৃতির পাতা ছাড়া আর কোথাও নেই। রমজান ঈদ হোক আর কুরবানির ঈদ। আনন্দ থাকতো সীমাহীন। মেহেদী পরা দিয়ে শুরু হতো আনন্দ। সকালবেলা তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে গোসল করা এবং নতুন জামা পড়ে পুরো গ্রামে ঘুরাঘুরি ।সালামি পাওয়ার নিয়ে ছিল প্রতিযোগীতা।কুরবানির ঈদের গরু কেনা অতিরিক্ত আনন্দ যোগ করতো। গরু নিয়ে মাতামাতি। গরুকে খড় খাওয়ানো। তারপর ছিলো একসপ্তাহ ব্যাপ্তি বিটিভির ঈদ আয়োজন। কী অধীর আগ্রহে বসে থাকতাম!!স্যাটেলাইট চ্যানেল এর ভীড়ে আমাদের সেসব আগ্রহ শেষ হয়েছে। এখন হাতে স্মার্টফোন। আর বড় হওয়ার সাথে সাথে আমার ঈদ আনন্দটাও কোথাও জানি চুরি হয়ে গেছে।

সাদিয়া সাবাহ্
নৃবিজ্ঞান,
১২তম আবর্তন।

একটা সময় ছিল যখন ঈদ মানে বুঝতাম গোশত খাওয়া, হাতে মেহেদী দেওয়া এবং কিছুদিনের মধ্যে সকল মেহমান একত্রিত হওয়া। সকল মেহমান আসলেও আমার কাছে প্রাধান্য পেত আমার চাচাতো, মামাতো, ফুফাতো ভাই-বোনেরা। কারণ তাদেরকে আমি পেয়ে যেতাম আমার খেলার সাথী হিসেবে। তখন সারাদিন ওদের সাথে খেলতাম, একসাথে খেতাম। কিন্তু যখন ওরা চলে যেত তখন মন খারাপ করে বসে থাকতাম। ঈদের সময় আরেকটি বিষয় খুবই ভালো লাগতো আর তা হলো ঈদের ছুটিতে কয়েকদিন কোনো বই পড়তে হবে না। টিভি দেখতাম তখন। গ্রামে বাড়ি হওয়ার সুবাদে ছোটবেলায় আমাদের বাড়িতে ডিসলাইন বা ক্যাবল নেটওয়ার্ক ছিলো না। ছিলো না কোনো রঙ্গিন টেলিভিশন। সাদাকালো টেলিভিশনের বিটিভি চ্যানেলে ঈদের সপ্তম দিন পর্যন্ত প্রতিদিন একটি করে ছায়াছবি হতো। প্রতিদিন অনেক আগ্রহ নিয়ে স্বপরিবারে সেই সিনেমাগুলো দেখতাম। ধীরে ধীরে বড় হতে লাগলাম, ছোটবেলার সেই ঈদ আনন্দগুলোও হারিয়ে যেতে লাগলো। তবে ছোটবেলার আনন্দ হারিয়ে গেলেও নতুন আনন্দ যোগ হয়েছে৷ যেমন এখন কোরবানির ঈদে মাংস কেটে তিনভাগ করে একভাগ গরীব-মিসকিনদের বিলি করতে হয়। অনেকের কাছে এটি শ্রমের কাজ হলেও আমার কাছে আনন্দেরনে হয়। কারন তারা যখন মাংস হাতে পায় তখন তাদের মুখে যে হাসি ফুটে ওঠে তা সচারাচর দেখতে পাওয়া যায় না। তারপর মেহমানদের বাড়িতে মাংস দিতে হয় সেটিও অনেক মজার হয় এবং সবার শেষে বন্ধুদের সাথে একসাথে হয়ে ঈদ আড্ডা শুরু হয়। পরিকল্পনা হয় পরবর্তী কোনদিন কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায় এবং সেই পরিকল্পনা সফল হওযার মাধ্যমে শেষ হয় একটি ঈদ আনন্দ।
এভাবেই আসে ঈদ, আবার চলে যায়। শুধুই পরিবর্তন হয় আনন্দ।

মোঃ মেহেদী হাসান
গণিত বিভাগ,
১৫তম আবর্তন।

শৈশবকাল থেকেই প্রতি বছরের ঈদ মানে আমার কাছে এক অন্যরকম অনুভূতি বয়ে আনে। তেমনিভাবে এই বছরের ঈদ নিয়েও অনেক উৎসাহ ছিল কিন্তু মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে তা আর হয়ে উঠলো না। কিন্তু আমার ফেলে আসা ঈদের আনন্দগুলো তো আর ভুলতে পারবো না কারন সেই আনন্দের মধ্যে রয়েছে এক অফুরন্ত ভালোবাসা। আর সেই ভালোবাসা হলো আমার নিজ গ্রামের প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা। এই ভালোবাসা বা এই আনন্দের অনুভূতি আমি আর কোথাও পাই না। শুধুমাএ আমার নিজ গ্রামেই তা পেয়ে থাকি। প্রতিটি বছর ঈদের এক মাস বা দুই মাস আগে থেকেই আমার বাড়ি যাওয়ার উৎসাহ বেড়ে যায়। তেমনিভাবে ঈদ মানে আমার কাছে সবার আনন্দ সুখ ভাগ করে নিয়ে উপভোগ করা। ঈদ মানে বাচ্চাদের মতো এখনো আমার কাছে অনেকগুলো নতুন জামা, জুতো ইত্যাদি কেনাকাটা করা। আর আরেকটি মজার বিষয় হলো ঈদের নতুন জামা ঈদের আগে কাউকে দেখাতাম না দেখালে আমার ঈদ শেষ হয়ে যাবে। এই কাজটি আমি এখনো করি। আরেকটি মজার বিষয় হলো ঈদ কার্ড উপহার হিসেবে পেতে খুব ভালো লাগতো আর বিভিন্ন রকম ঈদ কার্ড নিজের হাতে বানিয়ে আমি আমার প্রিয় মানুষদের উপহার দিতাম। এই ঈদ কার্ড তৈরির মাধ্যমে আমি এক অন্যরকম আনন্দ অনুভব করতাম। ঈদের দিন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে গোসল করে নতুন জামা পরে সাজুগুজুকরে সবাইকে সালাম দিয়ে সালামি নিতাম। সালামি নেওয়াটা আমার কাছে খুব ভালো লাগতো। কেউ সালামি না দিলে তার সাথে কথা বলতাম না খুব রাগ করতাম। তারপর ঘুরে বেড়াতাম প্রকৃতির সাথে। প্রকৃতির সাথে কাটাতাম আমার ঈদের দিনের আনন্দের মুহূর্তটা। প্রকৃতির সাথে ছবি তুলতাম বিভিন্নভাবে। আমাকে প্রকৃতির রংঙে সাজিয়ে তুলতাম হরেক রকম ভাবে। তারপর ঈদের দিন আমি এক অন্যরকম প্রতিযোগিতার আয়োজন করতাম। ঈদের সালামি গুলো দিয়ে বিভিন্ন রকম উপহার কিনে আনতাম।তারপর নিজ গ্রামের সবাইকে নিয়ে আনন্দ করতাম। অনেক গুলো ছোট ছোট টুকরো কাগজে গান, নাচ,কবিতা, অভিনয় এগুলো লিখে প্রতিযোগিতা করতাম। তারপর যে সবচেয়ে ভালো করেতো এই ভাবে ১ম, ২য়, ৩য় অনুযায়ী পুরষ্কার দেওয়ার আয়োজন করতাম।বড় কয়েকজনকে বিচারক বানাতাম। আমার কাছে এই আনন্দের অনুভূতিটা সবচেয়ে বেশি স্পেশাল। তারপর অনুষ্ঠান শেষ করার পর চটপটি, ফুচকার আয়োজন ও করতাম সবার জন্য। তারপর পুরষ্কার পর্ব শেষ করার পর আমরা একসাথে নেচেছি। কতই না সুন্দর ছিলো সেই ঈদের আনন্দ গুলো!! যা এই বছর আর ফিরে পাইনি। এইভাবে আমার ঈদের আনন্দ কাটতো স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার এই অনুভূতির মাধ্যমে। কিন্তু এই বছরে আর এটা হয়ে উঠলো না। আমার কাছে প্রতিবছরের ঈদ মানে এক অসাধারণ আবেগ ভরা অনুভূতি যা প্রকাশ করে কখনো শেষ করা যাবে না।

তাজরিয়া খান প্রিতু
দর্শন বিভাগ
১৫ তম আবর্তন।

ফিচার রাইটারঃ
মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ
শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

সংবাদটি আপনার সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার দিন

এই ক্যাটাগরীর আরোও সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশেষ সংখ্যা

%d bloggers like this: