1. admin@protidinershomoy.com : admin :
  2. nasimriyad24@gmail.com : ডেস্ক রিপোর্ট : ডেস্ক রিপোর্ট
  3. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩৬ পূর্বাহ্ন

ইচ্ছেমত কমিটি দেয়ায় ছাত্রলীগজুড়ে ক্ষোভ!

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সময় : বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ২৬১ জন পড়েছেন

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দায়িত্ব নেওয়ার পর আল নাহিয়ান খান জয় এবং লেখক ভট্টাচার্য ২০১৯ সালে ১৭ ডিসেম্বর বিবাহিত, অনুপ্রেবেশকারী, হত্যামামলার আসামী, মাদক মামলার আসামী, মাদকসেবনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৩২ জন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেন। পরবর্তীতে শূন্য পদগুলো খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণ করার কথা জানান সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু বছর পার হলেও এখনও শূন্য পদগুলো পূরণ করতে পারেনি।

শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শূন্য কিছু পদ ছাড়া প্রায় ৩০০ সদেস্যর কার্যনির্বাহী কমিটি রয়েছে নামেই। পদ থাকলেও নেতাদের নেই কোনো সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব। সভাপতি জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখকের একক সিদ্ধান্তে চলছে সংগঠন। দায়িত্ব গ্রহণের পর একটি ইউনিটেরও সম্মেলন হয়নি, হয়নি কার্যনির্বাহী কমিটির মিটিংও। কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গঠন করা হচ্ছে বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি।

অন্যদের মতো ফেসবুক কিংবা গণমাধ্যমে কমিটি দেখেন ইসি কমিটির নেতারা। শুধু কমিটি গঠন নয়, সংগঠনের যে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেন তারা দুজনেই। গত সম্মেলনের পর কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও সম্মেলন নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। জয়-লেখক দেখভাল করছেন সবকিছু। নেতাকর্মী দূরে থাক, গণমাধ্যমকর্মীদের ফোন না ধরাসহ নানাভাবে এড়িয়ে যাচ্ছেন বেশ কয়েক মাস। যা নিয়ে ছাত্রলীগজুড়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

ছাত্রলীগ সূত্রে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের পূর্ণ মেয়াদ নিয়ে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের মাঝে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। জয়-লেখক ভারমুক্ত হওয়ার পর থেকে ঠিক কতদিন সাংগঠনিক দায়িত্বপালন করবে, তার সঠিক তথ্য জানে না ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কোনো নেতা।

ফলে সংগঠনের বর্তমান কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও কবে নাগাদ ৩০তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। অথচ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দুই বছর পরপর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সে হিসাবে গত চলতি বছরে সংগঠনটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে।

জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোহান খান বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমাদের কমিটির মেয়াদ শেষ। কিন্তু আগামী সম্মেলন কতদিনে হবে, সে বিষয়টি আমাদের কারো জানা নেই।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সাংগঠনিক নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে শুধু ভারমুক্ত করেছেন, কিন্তু তারা কতদিন দায়িত্ব পালন করবেন সে বিষয়ে তিনি কোনো নির্দেশনা দেননি। আশা করি, সম্মেলন কবে হবে, সে বিষয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা সিদ্ধান্ত নেবেন।

চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্যকে সভাপতি-সম্পাদক পদে ভারমুক্ত করে পূর্ণ দায়িত্ব দেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠানে এই দুই নেতাকে ভারমুক্ত করার প্রস্তাব দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এসময় সেই প্রস্তাবে সম্মতি দেন সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনা।

এর আগে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে বাদ দিয়ে সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আল নাহিয়ান জয়কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নেত্রীর দেয়া দায়িত্ব গ্রহণের পর কেন্দ্র, জেলা, মহানগর, উপজেলাসহ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া ইউনিটিতে সাংগঠনিক কার্যক্রম বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংগঠনের পাঁচজন সিনিয়র সহ-সভাপতি, পাঁচজন সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পাঁচ সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদককে সাথে নিয়ে ওই মাসেই আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করতে গণভবনে যান আল নাহিয়ান জয় এবং লেখক ভট্টাচার্য।

এসময় ছাত্রলীগের এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুকন্যার কাছে দাবি করেন, ছাত্রলীগ যেনো সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্ভর না হয়।

সে জন্য সভাপতি-সম্পাদক যেনো কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে সমন্বয় করে, জেলা-উপজেলা সম্মেলন, প্রার্থীদের যোগ্যতা যাচাই-বাছাই, কমিটি অনুমোদন এবং তৃণমূলের সাংগঠনিক সফর করেন।

ছাত্রলীগের ওই নেতার বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জয়-লেখককে কার্যনির্বাহীর সিনিয়র নেতাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশ দেন। এসময় ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সিনিয়র চার নেতা উপস্থিত ছিলেন।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শীর্ষপর্যায়ের নেতাদের অভিযোগ, বঙ্গবন্ধুকন্যার সেই নির্দেশনা অমান্য করে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সিনিয়র নেতাদের সাথে সমন্বয় না করে ঢাকায় বসে প্রেস রিলিজে কমিটি গঠন এবং ভিত্তিহীন অভিযোগে বিভিন্ন ইউনিটের সভাপতি-সম্পাদককে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিচ্ছেন ছাত্রলীগের সভাপতি-আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

প্রেস রিলিজে গঠিত কমিটির দায়িত্ব পাওয়া এসব কমিটি অনুমোদনের আগে পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত, যোগ্যতা ও সাংগঠনিক দক্ষতা আছে কিনা সে বিষয়ে কোনো সঠিক খোঁজখবর নিচ্ছেন না তারা। ফলে সংগঠনের নিয়মবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকেও কেউ কেউ দায়িত্বশীল পদপদবী বাগিয়ে নিচ্ছে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ সংগঠনের শীর্ষ নেতারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা যায় সম্মেলন ও সাংগঠনিক সফর ছাড়াই বিভিন্ন স্থানে কমিটি ঘোষণ করা হচ্ছে। ঘোষিত কমিটি সম্পর্কে সভাপতি-সম্পাদকের বাইরে কার্যনির্বাহী সংসদের কেউ অবগত নয়। পদপ্রাপ্ত বিতর্কিত নেতাদের দায় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরা নিতে পারে না।

তারা আরও বলেন, ছাত্রলীগ একটি ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন। গঠনতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই নেতৃত্ব তৈরি করা হয়। কিন্তু বর্তমান নেতৃত্বে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমে অচল অবস্থা বিরাজ করছে।

এই নেতৃত্বের মাধ্যমে সংগঠনের ভালো কিছু আশা করা যায় না।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতিমাসে একবার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মিটিং করার বিধান রয়েছে। অথচ বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এক বছরের অধিক সময় পার করেছে, দীর্ঘ এই সময়ে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের একটি মিটিংও করতে পারেননি তারা। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ সংগঠনের শীর্ষপর্যায়ের নেতারা।

তারা বলছেন, সংগঠনের মাসিক সভায় সমস্যা ও সম্ভবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। তৈরি হয় সাংগঠনিক কর্মপরিকল্পনা। অথচ মাসিক সভা তো দূরের কথা, দেশে রাজনৈতিক নানা ইস্যুতে কার্যনির্বাহী সংসদের সিনিয়র সদস্যদের সাথে সমন্বয় করছে না ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক। সংগঠনের দুই শীর্ষ নেতার এমন কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছে শীর্ষপদধারীরা। সভাপতি-সম্পাদকের সাথে দূরত্ব বাড়তে শুরু করেছে।

জানতে চাইলে ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এতো ছোট সংগঠন নয় যে কাউকে না জানিয়ে রাতের আঁধারে বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করতে হবে। সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হলে বিতর্কমুক্ত নেতৃত্ব তুলে আনা সম্ভব। যেভাবে ঘোষণা করা হচ্ছে, তাতে বিতর্ক থেকে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, জয়-লেখক ভারমুক্ত হওয়ার পর যতগুলো কমিটি ঘোষণা করেছেন, একটি কমিটির বিষয়ে সিনিয়র নেতাদের সাথে সমন্বয় করা হয়নি।

বর্তমানে দেশের অধিকাংশ জেলা, মহানগর এবং উপজেলাসহ বিভিন্ন ইউনিটের মেয়াদোত্তীর্ণ ছাত্রলীগের কমিটি। কোথাও কোথাও ১০ থেকে ১২ বছর ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। কোথাও আবার নতুন সভাপতি-সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে ব্যর্থ দায়িত্বপ্রাপ্তরা। ফলে ঝরে যাচ্ছে তরুণ নেতৃত্বে। কোথাও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হলেও অর্থের বিনিময়ে পদ পাচ্ছে বিতর্কিতরা। তবে তৃণমূলে সংগঠনের এমন অবস্থায় কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতারা।

তাদের দাবি, কার্যনির্বাহী সংসদে সহ-সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, বিষয়ভিত্তিক সম্পাদক, সহ-সম্পাদক ও উপ-সম্পাদকদের বিষয়ভিত্তিক দায়িত্ববণ্টন করা হয়নি। ফলে নতুন কমিটি গঠন ও ভাঙায় ভূমিকা রাখতে পারছেন না তারা। ইচ্ছে থাকলেও তৃণমূলে সাংগঠনিক সফর করতে পারছেন কেউ।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম বলেন, জয়-লেখকের নেতৃত্বে একটিও মাসিক সভা হয়নি। তিনি আরও বলেন, ঘোষণা হওয়ার পর জানতে পারি কোন ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের শুধু নামে পদ, কিন্তু কোনো কাজ নেই।

সংগঠনের ভেতরে ওঠা এসব অভিযোগ নিয়ে গত তিনদিন ধরে কথা বলার চেষ্টা করে সম্ভব হয়নি। ফোন কল এবং এসএমএসেও সাড়া দেননি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

সংবাদটি আপনার সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার দিন

এই ক্যাটাগরীর আরোও সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশেষ সংখ্যা

%d bloggers like this: