ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের পাথরাইল গ্রামের প্রবাসী মাহমুদুল হক লিটনের জীবন এখন লন্ডভন্ড। সাজানো সুখের সংসারের আনন্দ কারও জীবনে বেশী দিন থাকেনা। মাহমুদুল হক লিটনের জীবনেও ঘটেছে এমনই এক ঘটনা।
স্ত্রীর প্রতারনার ফাঁদে পড়ে তার জীবনে নেমে এসেছে দুর্বিসহ যন্ত্রনা। পরিবারের একমুঠো সুখের আশায় দীর্ঘ্যদিন ধরে মরুর দেশে অবস্থান করছেন। প্রায় ৫ বছর যাবত মরুর দেশ কুয়েতে গিয়ে জীবনের চাকা ঘুরাতে নানা রকম চরাই উৎরাই পাড়ি দিয়ে সংসারের স্বচ্ছলতার জন্য নানা রকম প্রতিবন্ধকতা সত্যেও বেছে নেন প্রবাস জীবন।
জানা গেছে, গত ২০১৯ সালে ২৪ জুলাই তারিখে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া এলাকার ডুয়াটি গ্রামের মেজবা উদ্দিনের মেয়ে সাবিনা আক্তারের সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয় । বিবাহের পর তাদের সংসার জীবন কিছুদিন ভালই কাটছিল।
লিটন অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পর কিছুদিন ভালই কাটছিল। তা ছিল লোক দেখানো। বিবাহের পর প্রায় ৬ ভরি স্বর্নগহনা, আসবাবপত্র দেই। প্রবাসে থাকাকালিন সময়ে বিভিন্ন মাধ্যমে অনেক টাকা-পয়সা পাঠাই। এছাড়া তার বাবা-মা বিভিন্ন অযুহাতে অনেক টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে টাকা-পয়সা আমার প্রয়োজনে ফেরত চাইলে স্ত্রী ও তার পরিবারের লোকজন আমাকে নানাভাবে ফন্দিফিকির করে টাকা-পয়সা ফেরত দিতে টালবাহানা শুরু করে। এছাড়া আমার উপহারের স্বর্ণগহনাও কোথায় রয়েছে তা বলতে অস্বীকার করেন।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে আমার পরিবারের লোকজন শ্বশুরালয়ে নিয়ে যেতে চাইলে সেখানে যেতে অনীহা প্রকাশ করে। এমনকি আমার পরিবারের লোকজনের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করে। বিষয়টি নিয়ে সাবিনা ও তার পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বললে উল্টো মেয়ের পক্ষ নিয়ে আমার পরিবারের লোকজনের সাথেও অসৌজন্যমুলক আচরন করে। অপরদিকে আমি প্রবাসে চলে আসার পর কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে স্বেচ্ছাচারী আচরন শুরু করে। আমার বাড়িতে বসবাস না করে সে পিতার বাড়িতে বসবাস শুরু করে। আমার ফোন রিসিব না করে দীর্ঘ্য সময় অন্য অজ্ঞাত নাম্বারে ব্যস্ত থাকে। এ নিয়ে আমি তার চলাফেরার ব্যাপারে আপত্তি জানালে সে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করবে বলে জানায়। এতে আমার এবং আমার পরিবারের সাথে তার এবং শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথে দূরত্ব বাড়তে থাকে।
সম্প্রতি আমার পরিবারের লোকজন স্ত্রী সাবিনাকে কে আমার বাড়িতে আনার জন্য গেলে সে বাড়িতে আসবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেয়। এরই মধ্যে সে আমার এবং আমার পরিবারের সাথে মোবাইল সহ সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
অতি সম্প্রতি সে আমার বাড়িতে বিবাহের তালাক নোটিশ পাঠায়। আমি এবং আমার পরিবারের লোকজন শ^শুর সহ পরিবারের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করলে আমার সাথে আর ঘর-সংসার করবেনা এবং টাকা-পয়সা ও অন্যান্য মালামাল ফেরত দিবেনা বলে জানায়।
বিষয়টি নিয়ে লিটনের ভাই হুমায়ুন কবির জানান, আমার ভাই লিটনের নিকট থেকে বিপুল পরিমান টাকা-পয়সা নিয়ে আর ফেরত না দিয়ে একতরফা ভাবে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছে।
স্থানীয় আজিজুর রহমান জানান, লিটন প্রবাস থেকে পাঠানো টাকা-পয়সা খুইয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এর একটি সুরাহা হওয়া দরকার। লিটনও প্রবাসে থেকে জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করেছে।
বিষয়টি নিয়ে জনৈক প্রবাসী আঃ আলীম বলেন, লিটনের সাথে পরিচয়ের সুবাদে সে দীর্ঘ্যদিন যাবৎ প্রবাসের কষ্টার্জিত টাকা স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়িতে পাঠিয়ে এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। দুইকুল হারিয়ে এখন সে পাগলপ্রায়। এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সাবিনা আক্তার ও তার পরিবারে সদস্যদের যোগাযোগ করলে তারা স্বামীর খারাপ আচরন এবং আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেন।
Leave a Reply