জি এম ফুয়াদ মিয়াঃ
শিক্ষাকে বলা হয় জাতির মেরুদণ্ড। আর প্রাথমিক শিক্ষা হলো শিক্ষার প্রাণ। আর এ উপলব্ধি থেকেই বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে ঢেলে সাজিয়েছেন। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার “রুপকল্প ২০৪১” নির্ধারন করে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহন করেছেন। এর মধ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের সকল লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে অর্থনৈতিকভাবে অন্যতম শক্তিশালী -সমৃদ্ধ একটি দেশ।
এই অভীষ্ঠ লক্ষ্যমাত্রাগুলো সামনে রেখে বর্তমান সরকার সকলের জন্য অন্তর্ভূক্তিমূলক ও সমতা ভিত্তিক গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ ও জীবনব্যাপী শিক্ষালাভের সুযোগ সৃষ্টি এসডিজি -৪ বাস্তবায়নে নানামুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর ফলে সকলের জন্য নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভূক্তিমূলক ও কার্যকর শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিত হবে। বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষাখাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। ১ যুগ পূর্বেও প্রাক- প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রাথমিক স্তরে ছিলো না। বর্তমান সরকার প্রাক- প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে শিশুদের প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি উপযোগী করে গড়ে তুলছে। তাদের শারীরিক, মানসিক বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ সাধন হচ্ছে।
প্রাথমিক শিক্ষার অন্যতম বড় একটি চ্যালেঞ্জ শিশুদের প্রতিদিন উপস্থিতি নিশ্চিত করা। এক্ষেত্রে সরকারের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত মিড ডে মিল বাস্তবায়নের ফলে উপস্থিতি বৃদ্ধির সাথে সাথে ঝরে পড়া রোধ পাচ্ছে।
বিদ্যালয়ের উন্নয়ন তরান্বিত করতে স্লিপ ফান্ডের অর্থ, রুটিন মেরামত, ক্ষুদ্র মেরামত, প্লে কর্ণার তৈরীর জন্য বরাদ্দের ফলে বিদ্যালয়গুলোতে শিশু বান্ধব পরিবেশ তৈরি করেছে সরকার যা শিশুদের বিদ্যালয়মুখী করতে ভূমিকা রাখছে।
পড়ালেখার পাশাপাশি কাবিং কার্যক্রম, স্টুডেন্ট কাউন্সিল, হলদে পাখি, ক্ষুদে ডাক্তার কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে তারা শৃঙ্খলা, সামাজিকতা, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি সহ নৈতিক শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।
শিশুদের মানসিকভাবে প্রফুল্ল রাখতে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডকে তরান্বিত করছে সরকার। ফলে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে তাদের বিচরণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রতিটি বিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়নে অত্যাধুনিক নতুন নতুন ভবন নির্মাণ, ওয়াশব্লক নির্মাণ হচ্ছে।
মেধাবীদের প্রাথমিক শিক্ষায় নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্র গতিশীল হচ্ছে।
তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা নিশ্চিতকরণে দক্ষ শিক্ষক তৈরির জন্য প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আধুনিক মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও ডিজিটাল কন্টেন্ট ব্যবহারের মাধ্যমে চলছে পাঠদান।
সরকারের উপরোক্ত কার্যক্রমের সাথে রয়েছে এসডিজি ৪ বাস্তবায়নের নিবিড় সম্পর্ক।
২০৪১ সালের উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হলে আজকের শিশুদের গড়ে তুলতে হবে প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক শিক্ষায়। আমাদের আজকের শিশুরাই নেতৃত্ব দিবে ২০৪১ সালের উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।
লেখকঃ নাগরপুর সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জি এম ফুয়াদ মিয়া।
Leave a Reply