রাজশাহীর আলোচিত শাহেন শাহ্ হত্যা মামলার প্রধান আসামি রাসিক ১নং ওর্য়াডের তিন বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর বিএনপি নেতা মুনসুর রহমানসহ সকল আসামীদের মুক্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় রাজশাহী কোর্ট শহীদ মিনারের সামনে বিক্ষোভ মিছিল শেষে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনের পূর্বে ১নং ওয়ার্ড এলাকাবাসীর আয়োজনে রায়পাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কোর্ট শহীদ মিনার চত্বরে আসেন। এরপর শহীদ মিনারের তারা মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন শেষে রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মিছিল ও মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন এ.কে.এম রবিউল করিম, ইমাম জাকীর হেসেন, এডভোকেট রকি, এলাকাবাসী মাসুম, সাদ্দাম, মোজাহার হোসেন, সম্্রাট, সুমন, মোহন, জনি, সেলিম, রানা, মনোয়ারা খাতুন, তানিয়া কাতুন, নুরুল ইসলাম নুর, মুনসুর এর ছেলে রাফি, আব্দুল ওয়াদুদ বাবলু, শাহেবজাদা, শামীম রেজা, বদরুদ্দোজা বদও, মাহুফুজ আলম, আলিম রেজা, রংলাল, হাসান আলী, বখতিয়ার রানা, হিরা, জোসনা, কোরবান আলী, মঞ্জু, সাইফুল ও জহুরুল। এছাড়াও মিছিল ও মানববন্ধনে ১নং ওয়ার্ডের দমমত নির্বিশেষে সর্বোস্তরের স্থানীয় জনগণ, বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দসহ শতশত নারী পুরুষ অংশগ্রহন করেন।
মানবন্ধনে উপস্থিত জনগণ বলেন, তিনবারের জনপ্রিয় সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনসুর রহমানকে প্রধান আসামী করে ২০১৩ সালে একটি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর বিজ্ঞ আদালত শাহেন শাহ হত্যার সেই মিথ্যায় মামলায় ফরমায়েশি রায়ে মনসুর রহমানসহ মোট ৯জনকে ফাঁসি ও এক লক্ষ করে টাকা জরিমানা করা হয়। সেইসাথে একই ধারায় ২২জনকে যাবজ্জীবন এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা করে প্রতিজনকে জরিমানা করেন রাজশাহী মহানগর দায়রা জর্জ আদালতের বিচারক। সম্পূর্ন বে-আইনী ভাবে আসামীদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে বক্তরা উল্লেখ করেন।
মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত অন্যান্য আসামীরা হলেন, মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে হাসানুজ্জামান হিমেল ও তৗফিকুল ইসলাম চাঁদ, গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মহাসীন, মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে সাইরুল, নুহু শেখের ছেলে রজব, মৃত আক্কাস আলীর ছেলে বিপ্লব, গোলসের কসাই এর ছেলে মমিন ও আব্দুস সালামের ছেলে আরিফুল ইসলাম।
এদিকে যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন- গিয়াস উদ্দিন ওরফে গেসুর ছেলে মাহাবুল, মৃত তাজু শেখ এর ছেলে সাত্তার, মৃত আজিম আলীর ছেলে সাজ্জাদ হোসেন, মৃত ঝড়ু শেখের ছেলে বখতিয়ার আলম রানা ওরফে রংলাল ও হাসান আলী, মৃত লিয়াকত মন্ডল ওরফে লেক মন্ডলের ছেলে মাসুদ, মৃত তাইদ এর ছেলে রাসেল, ইমদাদুল হকের ছেলে রাজা, মজিবর রহমানের ছেলে মুর্তুজ, মোস্তফার ছেলে সুমন, মহাসীন এর ছেলে আসাদুল ও আখতারুল, মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে জইদুর রহমান, মৃত গোলাপ শেখ এর ছেলে ফরমান আলী, মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে জয়নাল আবেদীন, রেজাউল করিম এর ছেলে রাজু আহম্মেদ, মৃত মাজদার আলীর ছেলে আকবর আলী, মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে সম্রাট হোসেন, মৃত ওয়াজেদ আলী ওরফে ওজার ছেলে লাল মোহাম্মদ ওরফে লালু ও টিয়া আলম, আজিম আলীর ছেলে আজাদ হোসেন ও মৃত ওয়াহেদ কসাইয়ের ছেলে মাসুম। এরা সবাই এখনো জেলে রয়ছেন।
তারা আরো বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় সাবেক এই ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে আসামী করা হয়। দীর্ঘ সময় আওয়ামীলীগ শাসনামলে মামলাকারীদের এবং সাবেক খুনি হাসিনা সরকারের পেটয়া বাহিনীর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারে নি। তবে ৫ আগস্ট স্বৈরাচার খুনি হাসিনা সরকারের পতনের পর বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারই প্রতিফলন স্মরূপ বৃহস্পতিবার এলাকাবাসীর দলমত নির্বিশেষে নির্দোষ মনসুর রহমানসহ সকল আসামীদের দ্রুত মুক্তির দাবীতে এই কর্মসূচী করেন বলে জানান। তারা আরো বলেন, যেহেতুৃ মামলাটি সম্পূর্ন রাজনৈতিক। এজন্য সকল দিক বিবেচনা করে দ্রুত মুক্তির দাবী জানান তারা। দাবী না মানলে আগামীতে এই বিষয়ে আরো কঠোর কর্মসূচীতে যাওয়ার ঘোষণাও দেন এলাকাবাসী।
উল্লেখ্য মামলার বিবরনী থেকে জানা যায় ২০১৩ সালের ২৮ আগস্ট শাহেন শাহ হত্যাকান্ডের জন্য বাদীপক্ষ রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে এই মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
Leave a Reply