ফরিদপুর—১ (মধুখালী—বোয়ালমারী—আলফাডাঙ্গা) আসনে একবার বিরতির পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন দলের সভাপতিমন্ডলির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রহমান। এর আগে গত নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনে আব্দুর রহমান দুইবার সংসদ সদস্য ছিলেন। আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন ঘোষণা করার চারদিন পর প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ঢাকা থেকে নির্বাচনী এলাকায় আসার একদিন আগে নিজের ফেসবুক ফেরিফাইড পেজে নেতাকমীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বার্তা দেন। আজ বুধবার (২৯ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় নির্বাচনী এলাকার আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের মালা দিয়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রবেশ করেন। এ সময় আব্দুর রহমান ছাদ খোলা জীপ গাড়িতে দাড়িয়ে আলফাডাঙ্গা সদরের চৌরাস্তা, বোয়ালমারীর সহস্রাইল বাজার, বাইখীর চৌরাস্তা, বোয়ালমারী চৌরাস্তা, সাতৈর বাজার, কাদিরদী বাজার, মধুখালীর মাইজকান্দি মোড়, মধুখালী রেলগেট ও নিজগ্রাম কামালদিয়ায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। আব্দুর রহমানের আগমনে তিন উপজেলার এসব পয়েন্টে দুপুরের পর থেকেই তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে ভীড় জমাতে দেখা যায়, এলাকার কর্মী সমর্থকসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর—১ (মধুখালী—বোয়ালমারী—আলফাডাঙ্গা) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমানসহ প্রায় দুই ডজন প্রার্থী। এর মধ্যে সাবেক আরেক সাংসদসহ সাবেক ছাত্র নেতারা প্রার্থী তালিকায় ছিলেন। তবে এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মনজুর হোসেন এবার নির্বাচনে মনোনয়ন ক্রয় করেননি। সারাদেশের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে ফরিদপুর—১ আসনের প্রার্থীদের নিয়ে গণভবনে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মত বিনিময় করেন। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় ধানমন্ডি ৩/এ থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ৩০০ আসনের মনোনীত প্রার্থীদের নামের তালিকা ঘোষণা করেন। নাম প্রকাশের পর থেকেই আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলা সদর ও গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ শুরু করেন নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। মনোনয়ন ঘোষণার দুইদিন পরই দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন উপদেষ্টা মন্ডলির কেন্দ্রীয় সদস্য কাজী সিরাজুল ইসলাম, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার ও বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম মোশাররফ হোসেনসহ কয়েকজনের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) নিজের ফেসবুক ফেরিফাইড পেজে নির্বাচনী এলাকায় আসার ঘোষণা দেন। আজ বুধবার আব্দুর রহমান ঢাকার পরিবাগ নিজের বাসা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাটিয়াপাড়া মোড় হয়ে আলফাডাঙ্গা মালা দিয়ে নির্বাচনী এলাকায় আসেন। তিনি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন। আব্দুর রহমান এর সাথে প্রায় সহস্রাধিক মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসসহ বহরে এবং নির্বাচনী এলাকার মোড়ে মোড়ে প্রায় ২০-৩০ হাজার বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের ঢল নামে। এ সময় আব্দুর রহমান দুই পাশের জনসাধারণকে ছাদ খোলা গাড়ীতে দাড়িয়ে হাত নাড়িয়ে অভিনন্দন জানায়।

এ সময় বিভিন্নস্থানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসতিয়াক আরিপ, সহসভাপতি মানোয়ার হোসেন মানু, আসাদুজ্জামান মিন্টু, সেলিম আহমেদ, প্রচার সম্পাদক নিয়াজ জামান সজিব, আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এসএম আকরাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আ. আলীম সোজা, আলফাডাঙ্গা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান খান বেলায়েত হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র সাইফুর রহমান, পৌর মেয়র আলী আকসাদ ঝন্টু, বোয়ালমারী উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মীরদাহ পিকুল, পৌর আ.লীগের আহ্বায়ক ও পৌর মেয়র সেলিম রেজা লিপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন চৌধুরী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রাসেল রেজা, মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রতন বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক বকু, উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান মুরাদুজ্জামান, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাহাত খান, সদস্য ও বোয়ালমারী যুবলীগের আহ্বায়ক শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটু, যুগ্ম আহ্বায়ক দাউদুজ্জামান, চৌধুরী রায়হান রকি, শফিউল্লাহ, ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান, সাইফুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, কামাল হোসেন, মোশাররফ হোসেন, নবাব উদ্দিন আহমেদ, শামসুল আলম বাচ্চু, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান, সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমদ, তিন উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ আরো অনেকেই।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বোয়ালমারী চৌরাস্তায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আব্দুর রহমান বলেন, আমাকে জননেত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের কাছে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে পাঠিয়েছেন। আমি এর আগেও দুইবার এমপি থাকাকালীন আপনাদের আমানতের খিয়ানত করি নাই। আপনাদের মাঝে একজন সেবক হয়ে আগামী দিনগুলি কাটিয়ে যেতে চাই। আমাকে আপনারা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে তিন উপজেলাকে মডেল হিসেবে উপহার দিবো ইনশাআল্লাহ।

আব্দুর রহমান শেখ হাসিনার নৌকায় সকলকে ভোট দেওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, নৌকায় ভোট দিলে দেশে বড় বড় উন্নয়ন হয়, নৌকায় ভোট দিলে দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকে। আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই বহিঃবিশ্বে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আর এটি একমাত্র শেখ হাসিনা সরকার আছে বলেই সম্ভব হয়েছে। সবশেষে তিনি সকলকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার অনুরোধ করেন।