1. admin@protidinershomoy.com : admin :
  2. nasimriyad24@gmail.com : ডেস্ক রিপোর্ট : ডেস্ক রিপোর্ট
  3. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৮ পূর্বাহ্ন

জীবনের সাথে লড়াই করে বেঁচে আছেন তারা

শামীম শিকদার
  • সময় : বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০২০
  • ২৩৩ জন পড়েছেন

মাটির ঘর ভেঙে পড়ছে। পরিত্যক্ত টিন ব্যবহার করা হয়েছে ঘরের দেয়াল তৈরিতে। টিনের ছোট ছোট ছিদ্র দিয়ে বিছানায় পড়ছে সূর্যের আলো। সে ঘর থেকে শোনা যাচ্ছে ক্ষুধার্ত শিশুর আর্তনাদ। হাঁড়িতে দেয়ার খাবার নেই। ক্ষুধার্ত সন্তানদের নিয়ে বাবা-মায়ের চোখে দুুশ্চিন্তার ভাঁজ। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে কমে গেছে আয়। বন্ধ হয়ে গেছে আয়ের প্রায় সকল উৎস। নেই সঞ্চয়ও। এ পর্যন্ত তারা পাননি কোন খাদ্য সহায়তা। গাজীপুরের কাপাসিয়ার অর্ধশতাধিক কুমার পরিবার ক্ষুধার জ্বালায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। সীমাহীন কষ্টে তাদের অবস্থা এখন সংকটময়। বাধ্য হয়ে কাজের সন্ধান করছেন তারা। কোথাও মিলছে না কাজ। মাটির তৈরি তৈজসপত্র ফেরি করে বিক্রিও বন্ধ হয়ে গেছে।

চার সন্তানের পড়া-লেখার খরচ ও খাবার নিয়ে কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন পাল সম্প্রদায়ের বিধবা স্বরস্বতী রানী। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে বেশ কয়েকবার ঘুরেও মিলেনি বিধবা ভাতার কার্ড। নুন আনতে পান্তা ফুরায়। আগের মতো বিক্রি নেই। এক জনের আয় দিয়ে কিভাবে চলবে তাদের সংসার? পাশেই কান্তা রানী পালের আহাজারি। ছেলে অন্তর চন্দ্র এ বছর এসএসসি পাস করেছে। কিন্তু ভাল একটি থাকার ঘরও নেই। কয়েরকদিন আগে বয়ে যাওয়া ঝড়ে ঘরের দেয়াল ভেঙে পড়ে গেছে। অন্যের ফেলে দেওয়া টিন ব্যবহার করে দিন কাটছে তাদের। ঘরে খাবার নেই। করোনার কারণে মানুষের বাড়ি বাড়ি মাটির তৈরি তৈজসপত্র বিক্রি করতে না পারায় বিপাকে পড়েছে নিন্ম আয়ের কুমার পরিবারগুলো। করোনার এই সময়ে জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকাটাই যেন তাদেরে জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
সরেজমিনে উপজেলার আড়াল গ্রামে দেখা গেছে, শুনশান নিরব পরিবেশ। নেই আগের মতো কর্মব্যস্ততা। শুয়ে বসে অলস সময় পার করছে কুমার পরিবারগুলো। কৃষি কাজ করার মতো জমিও নেই তাদের। করোনার কারণে মানুষ বাড়ি যেতে বাধা দিচ্ছে। তাই আয় রোজগার পুরোপুরি বন্ধ। ধার দেনা করে চলছে সংসার। তবুও পায়নি সরকারি বা বেসরকারি কোন খাদ্য সহায়তা।

প্রমিলা রানী পাল বলেন, এখন আর আগের মতো আমাদের কুমার পাড়ার আয় রোজগার নেই। আগে আমরা চরকা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরি করতাম। কিন্তু এখন চরকা ব্যবহার করা হয় না। কারণ চরকা দিয়ে জিনিপত্র তৈরি করে সে দাম পাওয়া যায় না। মাটি ও লাকড়ি কিনে আনতে হয়। শুধু পেটে-ভাতে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি।

এ পেশার সাথে জড়িত আছেন উপজেলা আড়াল, কড়িহাতা , তরগাঁও, ঘোষাবর, টোক, কামরা এলাকার প্রায় শতাধিক কুমার পরিবার। তারা তৈরি করেন দইয়ের পাতিল, মুটকি, গুড়ের পাউড়া, ভাপা পিঠার পাতিল, জল বিরা, ফুলের টপসহ হরেক রকমের জিনিসপত্র। চাহিদা কমে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে তাদের কাজ। বেকার হয়ে পড়েছে পরিবারের প্রায় সকল সদস্য। বাপ-দাদার ঐতিহ্যকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকা এ পেশা পরিবর্তন করছে অনেকে। বাপ-দাদার পেশা ছাড়ে এখন কি করবে। বুড়ো বয়সে কে দেবে তাকে কাজ? কথা গুলো বলতে বলতে দুচোখ জোড়া জলে টইটম্বুর হয়ে উঠেছে সুুকুমার পালের। ৪৫ বছর ধরে এ কাজ করেন তিনি। নেই নিজেস্ব কোন জমি। দুই ছেলে এক মেয়ে নিয়ে সংসার চলছে খেয়ে না খেয়ে।

সংবাদটি আপনার সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার দিন

এই ক্যাটাগরীর আরোও সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশেষ সংখ্যা

%d bloggers like this: