1. admin@protidinershomoy.com : admin :
  2. nasimriyad24@gmail.com : ডেস্ক রিপোর্ট : ডেস্ক রিপোর্ট
  3. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৫ অপরাহ্ন

বাংলাদেশ বিরোধী চক্রান্তের চির অবসান হোক: নিজাম চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
  • সময় : মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
  • ৩৪৯ জন পড়েছেন
বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই যে পরিমাণ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা, দক্ষতা, উন্নয়ন সক্ষমতা ও একজন বিশ্ব রাজনীতিক হিসেবে গ্রহণ যোগ্যতা অর্জন করেছেন তার সঙ্গে টেক্কা দেওয়ার মত কোন রাজনীতিক বাংলাদেশে তো নেই বরং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার কোন দেশেও দেখছিনা। এ কথাটি আজকের লেখার মধ্যে কেন যুক্ত করলাম এটা আজকের বিষয়বস্তুর সঙ্গে সামঞ্জস্য কিনা এ প্রশ্নের উত্তর পেতে পুরো লেখাটি পড়লেই বুঝতে পারবেন।
ক্ষমতায় যাওয়ার দিবা স্বপ্ন: গত ২০ জানুয়ারি ২০২১ এ জো বাইডেন আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ গ্রহণ করার পর বাংলাদেশের কিছু রাজনীতিক নাকি নড়েচড়ে বসেছেন। একটু খোলাসা করেই বলি, মির্জা ফখরুলরা, ড. ইউনুস ও ডা. জাফরউল্লাহ গংরা নাকি বলাবলি করছেন বাইডেন এডমিনিস্ট্রেশন এবার তাদেরকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। অবশ্য দিবাস্বপ্ন তো তারা দীর্ঘদিন ধরেই দেখে আসছেন, এছাড়া জনগণের উপর আস্থা না থাকলে, জনগণ ভোট না দিলে তাদেরকে পুড়িয়ে মারার ইতিহাসতো বিএনপি-জামায়াত গংদের চরিত্রের একটি অংশ সেটা তারা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করেছেন। আর জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতার যাওয়ার ইতিহাস তো তাদের কেমেস্ট্রীতে এমনিতেই নেই। বন্দুকের নল, ষড়যন্ত্র, হত্যা, ক্যু, ভোট কারচুপি আর বিদেশি টাকার উপর নির্ভর করেই তো তাদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার ইতিহাস। বিশ্ব রাজনীতি ও পরাশক্তির বিদেশ নীতির দ্রুত পরিবর্তনশীল পৃথিবী সম্পর্কে কোন ধারণা না থাকার কারণেই অশিক্ষিত রাজনীতিকদের মত এ ধরনের চিন্তা চেতনার উদ্রেক হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আমেরিকান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি তথা বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটা ঐতিহাসিক সুসম্পর্কই শুধু নেই, বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত ও শক্তিশালী ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হবে এ ব্যাপারে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। যেকোন দেশের সঙ্গে আমেরিকার বৈদেশিক সম্পর্ক ও নীতি কোন প্রকার ব্যক্তিগত সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয় না। আমাদের দেশের কিছু কিছু রাজনীতিক এ সত্যটুকু বুঝতে পারেন না। কারণ, তাদের বিচরণ খুবই সীমিত গ-ির মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র: এখন ষড়যন্ত্রকারীরা কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরার সঙ্গে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের এক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে, তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় একজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট সংবাদ প্রচার করা ও আমাদের সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার এক গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে ড: কামালের মেয়ের জামাই জামাতের লবিং ঘনিষ্ঠ ডেভিড বার্গম্যান, পর্নোগ্রাফী মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক কনক সরোয়ার ও পাকিস্তানপন্থী ইলিয়াস হোসাইনকে সামনে রেখে সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অপপ্রচার করার এ গভীর ষড়যন্ত্রে জামায়াত-বিএনপি এক বিশাল বাজেট নিয়ে মাঠে নেমেছে। বাংলাদেশের অভুতপূর্ব উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে দিশেহারা ব্যর্থ রাষ্ট্র পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আই এস আই এর একটি শক্তিশালী টিম এদের সঙ্গে কাজ করছে বলে শোনা যাচ্ছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সব যড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেবে এ দেশের আপামর জনগণ। যেমনি ভাবে ১৯৭১ সালে চরমভাবে আমরা তাদেরকে পরাজিত করেছিলাম।
চক্রান্তের শুরু: স্বাধীনতার অববহিতের পর পরই বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের বিরোধীতাকারীরা চক্রান্ত শুরু করে এবং সেটা আজও চলমান, কখনো শেষ হবে বলেও মনে হয় না। ১৯৭৪ সালের শেষদিক থেকে শুরু হওয়া মূল চক্রান্ত ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পূর্ব পর্যন্ত চলে, তখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ইত্যাদির মাধ্যমে জনমনে এমন একটা ভ্রান্ত ধারণা ঢুকিয়ে দিয়েছিল যে তখন সাধারণ মানুষের মাঝে এক রকম ভীতির সঞ্চার করাই ছিল চক্রান্তকারীদের মূল উদ্দেশ্য। বর্তমানে আবার একই ধারায় স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশের বিরুদ্ধে সারাক্ষণ অপপ্রচার চালাচ্ছে দেশে এবং প্রবাসে। কিন্তু তাদের এ সব চক্রান্ত দেশের আপামর জনগণের সমর্থনপুষ্ঠ শেখ হাসিনার সরকার বার বারই ধূলিসাৎ করে দিচ্ছে। তারপর ও চক্রান্তকারীরা কিন্তু থামছে না। চক্রান্তকারীদেরকে বুঝতে হবে এটা ২০২১ সাল, ১৯৭৫ সালের আদলের চক্রান্ত এখন আর কাজে আসবে না। বাংলাদেশের জনগণের একটা বদ্ধমূল ধারণা ইতিমধ্যেই সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে যে, একমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাই এ দেশের উন্নয়ন করতে সক্ষম। আওয়ামী লীগ ছাড়া ইতিপূর্বের ক্ষমতাসীন দলগুলোর দেশের উন্নয়নে উল্লেখ করার মত তেমন কোন ভূমিকা ছিল না। এছাড়া টানা তৃতীয় মেয়াদেও সর্বমোট চতুর্থবার ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও নেত্রী শেখ হাসিনা এখন স্পষ্ট বুঝতে পারেন কারা দেশের মিত্র আর কারা দেশের শত্রু।
আমাদের মহান মুক্তিসংগ্রামের পর সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশটির শতভাগ ভঙ্গুর অর্থনীতি ও অবকাঠামোকে মজবুত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করার কঠিন সময়ে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করে,তাদের প্রাথমিক চক্রান্তে সাময়িকভাবে জাতিকে সীমাহীনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে তাদের এ চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র যে চরম ভাবে ব্যর্থ হয়েছে আজকের বাংলাদেশ হচ্ছে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্রকারন্তরে তারা চরমভাবে পরাজয় বরণ করেছে। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে নি:শেষ করতে হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শেষ করে দিতে হবে, এটাই ছিল তাদের মূল চক্রান্ত। চক্রান্তকারীদের বদ্ধমূল ধারণা ছিল যে আওয়ামী লীগ আর কখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যার ইস্পাত কঠিন নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শুধু ঘুরেই দাঁড়ায়নি, টানা তৃতীয়বার ও সর্বমোট চতুর্থবার দলকে ক্ষমতাসীন করেছে। শেখ হাসিনা জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় ঐক্যমতের সরকার গঠন করেছিলেন। বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে বার বার সংলাপে বসেছিলেন। বিএনপি-জামায়াত চক্র কখনো শেখ হাসিনার শত শত অর্জনকে এক মুহূর্তের জন্যও স্বীকার করে নি, বরং জাতির পিতার হত্যাকারীদের ও যুদ্বাপরাধীদের বিচারে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবার পর অপরাধীদেরকে বাঁচানোর জন্য বিএনপি-জামায়াত গংরা পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্মরণাপন্ন হয়েছিল। বাংলাদেশের জনগণ তাদের এ হীন অপকর্ম কখনো সাপোর্ট দেয়নি বিধায় তারা দীর্ঘদিন যাবত ক্ষমতার বাইরেই রয়েছে। যে মুহূর্তে বাংলাদেশ নি¤œ মধ্য আয়ের দেশের জাতিসংঘ স্বীকৃতি লাভের পর যখন মধ্যম আয়ের দেশের অভিষ্ট লক্ষ্যের দিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তখনই তারা আবার গভির চক্রান্ত শুরু করেছে বাংলাদেশের ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনার সরকার যখনই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন এবং দলমত নির্বিশেষে কোন দুর্নীতিবাজকে এক বিন্দুও ছাড় দিচ্ছেন না ঠিক তখনই তারা আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত করার জন্য নানা ধরনের প্রোপাগান্ডা শুরু করেছে। সতের কোটি মানুষের এ দেশের সাধারণ নাগরিকগণ আদর্শবান, দেশ প্রেমিক, দৃঢ়চিত্তের অধিকারী, যদি তা না হতো আমরা এতদূর এগোতে পারতাম না। মিনিমাম দেশপ্রেম না থাকলে তো কোন জাতিই এগোতে পারেনা। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর ধারপ্রান্তে এসে যখন আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজনে ব্যস্ত, ঠিক একই সময়ে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের মরণ ছোবল সারা বিশ্বকে থমকে দিয়েছে। করোনাভাইরাস ক্রাইসিসের অত্যন্ত সফল মোকাবিলায় শেখ হাসিনার স্বার্থকতাকে মøান করে দিয়ে শেখ হাসিনার অনেক কষ্টে অর্জিত দেশের ভাবমূর্তিকে ধ্বংস করার কাজে লিপ্ত হয়েছে একটি মহল। আমরা সবাই জানি এরা কারা। এরা তারাই যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মনেপ্রাণে কখনো মেনে নিতে পারে নাই। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ও প্রাচীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত করা, জনগণকে ভুল বোঝানোর জন্য মিথ্যার বেসাতি করাই হচ্ছে তাদের মূল কাজ। জনগণ এখন অনেক সচেতন, তারা এখন বুঝতে পারছে যে একমাত্র শেখ হাসিনাই পারবে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে। ইতিমধ্যেই তিনি একাধিকবার তা প্রমাণও করেছেন। আজ একটি বিষয় এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন জনগণের কনফিউশন দূর করার জন্য। তা হলো এই, আমাদের সমাজে একটি শ্রেণি আছে যারা দেশপ্রেম, দেশের উন্নয়ন, বিশ্ব দরবারে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা এসব বিষয়কে থোড়াই কেয়ার করে। এ শ্রেণির লোকদের কোন আদর্শ নেই তারা একটি দলই করে আর তা হচ্ছে, যে দল যখন ক্ষমতায় থাকে – ছলেবলে কলকৌশলে তারা ঐ দলেরই অতি আপনজনে পরিণত হয়। আর এদের বর্তমান সংস্করণ হলো সাহেদ, পাপিয়া , সাবরিনা ও আরিফ গংরা। এদের অতীত রেকর্ড ঘাটলে দেখা যায় এরা বিএনপি-জামায়াত আমলেরই সৃষ্টি। এরা যুগে যুগে ছিল, এখনও আছে এবং ভবিষ্যতেও একেবারে নিঃশেষ হয়ে যাবে তা একেবারে হলফ করে বলা যাবে না। পুলিশবাহিনীর আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে দোষীদের শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রুত এদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হচ্ছে বিধায় শাহেদ গংরা আজ ধরা পড়ে বিচারের আওতাধীন আছেন। আবার এটাও কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারেরই অবদান। আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার কারণেই তো এরা ধরা পড়ছে, দেশের প্রচলিত আইনে এদেরকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু, দুঃখের বিষয় হলো যে সকল মিডিয়াগুলো সাহেদ গংদের নিয়ে সরকারের সমালোচনায় রাত দিন শত ঘণ্টা এয়ার টাইম ব্যায় করেছিলো তাদের অনেকেই এই বাটপার সাহেদকে বিভিন্ন টক শোতে ডেকে নিয়ে প্রমোট করেছেন, বুদ্বিজীবী বানিয়েছেন, এর দায় কি ওই সকল টকশো হোষ্ট ও মিডিয়াগুলো এড়াতে পারবেন? আমাদের সমস্যা হলো খুব গভীর আর সেটা হলো – অন্যের সমালোচনা করতে বেশ মজা পাই কিন্ত যখন কেউ আমার ভুলগুলো যখন ধরিয়ে দেয় তখন তাকে আমরা সহ্য করতে পারিনা। এ মানসিকতার পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি, না হয় সমান্তরাল রেখায় সব কিছু বিচার বিশ্লেষণ করা যাবে না। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী তাদের আকাশচুম্বী আনুগত্য ও দেশপ্রেমের উজ্বল দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠিত করে আজ সারা বিশ্বে অত্যন্ত সমাদৃত। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনিতে অত্যন্ত প্রশংসামূলক সেবাদানের মাধ্যমে তারা আজ দেশের সীমা অতিক্রম করে বিশ্বের সংকটাপন্ন দেশগুলোতে অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করে বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে এবং তা এখনও চলমান। একটা শ্রেণি সেনাবাহিনীর ভেতরে কনফিউশন সৃষ্টির মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এই দেশদ্রোহী অপরাধের জন্য তাদেরকে একদিন কঠিন বিচারের সন্মুখীন হতে হবে। এছাড়া রাজনীতির নামে, দোয়া মাহফিলের নামে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের উস্কানী দিয়ে দু’একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তার গর্হিত আচরণ রাজনীতিকে ভিন্নখাতে প্রবাহের অপচেষ্টা সচেতন নাগরিক সমাজের বুঝতে কোন প্রকার বেগ পেতে হচ্ছে না। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশটাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। আর এটাই হলো চক্রান্তকারীদের মূল গাত্রদাহ। তাদের এবারকার চক্রান্তের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে শেখ হাসিনাকে শেষ করে দেওয়া। তারা বিগত ৪০ বছরে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টসহ সর্বমোট ১৯ বার শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। বাংলাদেশ বিশ্ব সভায় আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এত স্বল্প সম্পদের মাধ্যমে কিভাবে একটা দেশের অর্থনীতি ,অবকাঠামোসহ সকল সূচকের এত অভূতপূর্ব উন্নতি করা যায় সে শিক্ষাদানে শেখ হাসিনা হচ্ছেন আজকের বিশ্বের রোল মডেল। সম্প্রতি আই এম এফ এর এক ডিক্লারেশনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের জি ডি পি, মাথাপিছু আয় সহ সকল সূচকগুলোতে অত্র অঞ্চলের সব দেশগুলোকে ছাড়িয়ে যাবার কথা বলেছে। মাথাপিছু আয়ের ক্রম উন্নতি, বিশাল বজেট , ঊর্ধ্বমুখী জি ডি পি’র গ্রোথ, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিদেশনীতি, বৈদেশিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে রফতানি আয় বাড়ানো, রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য ভর্তুকি প্রদানের মাধ্যমে বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করে ৪৫ বিলিয়ন ডলার মার্কে পৌঁছার অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সময় ৫০ বছরে ৫০ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এক ঐতিহাসিক হর্লমার্ক হিসাবে স্থান করে নিবে। তৈরি পোশাক রফতানিতে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে নিজেদের জায়গা করে নিতে শেখ হাসিনা সরকারের অবদান ইতিহাসে সংরক্ষিত থাকবে। বিগত কয়েক বছরে ১২ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক বিনিয়োগ এসেছে। সারা দেশে ১০০টি ইকোনোমিক জোন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার উদাহরণ আজ বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশ শেখ হাসিনার কাছ থেকেই শিখেছেন। দারিদ্র্য বিমোচন, শিশু মৃত্যুরহার হ্রাস, নারী উন্নয়ন, নারীদের সব স্তরের কর্মসংস্থান তথা পুলিশ, আর্মি, বিচার বিভাগসহ নারীরা আজ উচ্চপদস্থ সরকারি আমলার চাকরিতে স্থান করে নিয়েছেন নিজ গুণে।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ গুলোর মধ্যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারী নেতৃত্বের উত্থান সারা পৃথিবীকে অবাক করে দিয়েছে। সারা বিশ্বের সফল নারীনেতাদের মাঝে বঙ্গবন্ধু কন্যার স্থান জার্মানির চ্যান্সেলার এঙ্গেলা মার্কেলের পরেই দ্বিতীয় স্থান জায়গা করে নিয়ে বাঙালি জাতিকে সন্মানিত করেছেন। অবকাঠামো উন্নয়নে বিগত এক দশকের অভাবনীয় উন্নয়ন ইতিহাসে স্থান করে নিতে সক্ষম হবে। বিশ্বব্যাংকের ভূল সিদ্ধান্ত জননেত্রী শেখ হাসিনাকে দাবায়ে রাখতে পারেনি। নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত পদ্মা সেতুর বাণিজ্যিক ব্যবহার এখন শুধুমাত্র কিছু সময়কালের অপেক্ষামাত্র। রেলপথ সম্প্রসারনের মাধ্যমে সারা দেশকে রেলপথ নেটওয়র্কের আওতায় নিয়ে আসার মহাপরিকল্পনার কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে। বিদ্যুৎ খাতের আকাশচুম্বী মহাপরিকল্পনা আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যেই পুরো দেশ শতভাগ বিদ্যুতায়িত হবে। পায়রা সমুদ্র বন্দরে পরীক্ষামূলক অপারেশন ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। মংলা সমুদ্রবন্দর আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে, অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে বন্দরের ব্যবহারে আশাতীত সফলতা অর্জিত হয়েছ। মহেশখালীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের প্রাথমিক কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। দেশের মূল সমুদ্রবন্দর চট্রগ্রামকে আধুনিকায়ন ও ডিজিটালাইজড করার মাধ্যমে এর সক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি করা হয়েছে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টারমিনালের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। কক্সবাজার বিমানবন্দর, সিলেট বিমানবন্দর-এ দুটিকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করে বানিজ্যিক ব্যবহারের সুফল এখন দেশি এবং বিদেশি যাত্রীরা ভোগ করছে। পদ্মা সেতুর সন্নিকটে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক কানেটিভিটিতে নুতন মাত্রা যোগ করবে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোর ব্যস্ততা এখন চোখে পড়ার মত। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে আর কেউ গৃহহীন থাকবে না। মুজিববর্ষে ৯ লাখ গৃহহীনদের মধ্যে নুতন ঘর উপহারদানের টার্গেটের প্রথম পর্যায়ে এ সপ্তাহে প্রায় ৭০ হাজার গৃহহীনদের মাঝে নুতন বাড়ীর চাবি ও জায়গার দলিল হস্তান্তর করেন রাট্রনায়ক শেখ হাসিনা। ইতিপূর্বে ও তিন লক্ষ গৃহহীনদের মাঝে নুতন ঘর ও জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়। আগামী মার্চের মধ্যে আর ও এক লক্ষ গৃহহীনদের মাঝে নুতন ঘর ও জমির দলিল হস্তান্তরের লক্ষ্যে দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। পৃথিবীর ইতিহাসে এটা একটি বিরল ও ঐতিহাসিক ঘটনা। বন্যা, খরা, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সারা বিশ্বের সবখানে এখন অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, সাইক্লোন এখন যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাধীনতার সময়কাল থেকে বর্তমানে আমাদের চাষাবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ৩০% শতাংশ কমে যাওয়ার পরও আজ আমরা খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্নতা অর্জন করে খাদ্য রফতানি ও করছি। মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে আমরা এখন পৃথিবীর চতুর্থ স্থান দখল করে আছি। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আমরা কিন্তু পিছিয়ে নাই। হাইব্রিড পদ্বতিতে গবাদি পশু ও হাস মুরগি চাষাবাদের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে রফতানির সক্ষমতা ও ইতিমধ্যেই অর্জিত হয়েছে। অতএব দেশবিরোধী চক্রান্তকারীরা সাবধান! নিজ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত একমাত্র বাংলাদেশেই দেখলাম, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হলে স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতির চির অবসান এখনই ঘটাতে হবে। যেখানে কোভিড-১৯ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে কাবু করতে পারে নাই।
তাই বাংলাদেশকে আর কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাতেই বাংলাদেশ নিরাপদ, তারই পিতার নেতৃত্বে অর্জিত স্বাধীনতার মূল্যায়ন ও একে অর্থবহ করে তুলতে তিনিই সক্ষম, আজ তা প্রমাণিত সত্য। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল, সমুদ্রসীমা বিজয় করে ব্লু- ইকোনোমির অবারিত ধারা উন্মুক্ত করেই শুধু ক্ষান্ত হননি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে ভিশন২১ এর মহাপরিকল্পনাও করে দিয়েছেন। এটাই হচ্ছে ভীষণ আর এটাই শেখ হাসিনার একমাত্র মিশন- উন্নত বাংলাদেশ। ওয়াশিংটন পোস্টের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ ভবিষ্যৎ বিশ্ব রাজনীতিতে সামরিক ও বেসামরিক খাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ভৌগলিক অবস্থান, দ্রুতগতিতে উন্নত অর্থনীতির দেশে পরিণত হওয়া, ইমার্জিং ইকোনোমির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ আজ টক অব দ্য ওয়ার্ল্ডে এ পরিণত হয়েছে।
লেখক: 
নিজাম চৌধুরী
রাজনীতি ও অর্থনীতি বিশ্লেষক

সংবাদটি আপনার সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার দিন

এই ক্যাটাগরীর আরোও সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশেষ সংখ্যা

%d bloggers like this: